• দুর্গাপুজো শেষ হতেই বুড়িমাতার পুজোয় মেতে উঠল দিনহাটার পুটিমারি গ্রাম
    এই সময় | ০৯ অক্টোবর ২০২২
  • দুর্গাপুজো (Durga Puja) শেষ হতেই বুড়িমাতার পুজো ঘিরে মেতে উঠল দিনহাটার (Dinhata) পুটিমারি গ্রাম (Putimari Village)। আশ্বিন সংক্রান্তিতে পুটিমারি বুড়িরপাট এলাকায় এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর পাশাপাশি সাতদিন দিন ধরে চলবে মেলাও। শতবর্ষ প্রাচীন এই পুজো ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দারা উৎসবে মেতে ওঠে। এমনকি হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ একত্রিত হয়ে এই পুজোয় সামিল হন৷ এই পুজোকে কেন্দ্র করে শারদোৎসব (Durga Puja) শেষেও পুটিমরি গ্রামে রয়েছে উৎসবের মেজাজ৷

    দিনহাটা (Dinhata) শহর লাগোয়া পুটিমারি গ্রামে রাজ্য সড়ক থেকে কিছুটা উঁচুতে রয়েছে স্থানীয় বুড়িমাতা মন্দির। কথিত আছে, আজ থেকে প্রায় ১৪০ বছর আগে পুটিমারি গ্রামের তিন বাসিন্দা শ্রীনাথ বর্মা, হেমানন্দ বক্সি ও আসমাত বক্সি ব্যবসায়িক কাজে বাংলাদেশের রংপুরে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে দেবী চৌধুরানী গ্রামে বনদুর্গার পুজো দেখেন এবং কুশান গান শোনেন। এরপর নিজেদের গ্রামে ফিরে পরের বছর তাঁরা নিজেদের গ্রামেই দুর্গাপুজো করবেন বলে স্থির করেন। এরই মধ্যে তাঁদের একজনকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন, দুর্গা হিসেবে নয়, বুড়ি মা রূপে তিনি পুজো নেবেন। তখন থেকেই এখানে শুরু বুড়ি মায়ের পুজো।

    এবছর এই পুজো ১৩৮ তম বর্ষে পদার্পণ করল। দেবী এখানে বৃদ্ধা। সিংহের ওপর বসে থাকা দেবীর কোলে শিশু রয়েছে। মায়ের মন্দিরে আশ্বিন সংক্রান্তিতে গভীর রাতে পুজো শুরু হয়। সারারাত ধরে চলে পুজোপাঠ। এখানে ভক্তরা পুজোতে ফলমূল দেওয়ার পাশাপাশি হাঁসের ডিম উৎসর্গ করেন বলে স্থানীয়রা জানান। এছাড়া পাঁঠা ও কবুতর বলি দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। বলি দেওয়া হয় চালকুমড়ো এবং আখও।

    বংশপরম্পরায় এই প্রতিমা গড়ে আসছেন ভেটাগুড়ির মালাকার পরিবার। বর্তমানে মূর্তি গড়ার দায়িত্বে রয়েছেন গৌতম মালাকার। পুজো কমিটির সভাপতি কার্তিক রায় জানান, পুজো উপলক্ষে এবার মন্দিরের পাশের মাঠে সাতদিনব্যাপী মেলা বসবে। সেখানে কুশান যাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয়রা জানান, এই পুজো ঘিরে স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন উৎসবে মেতে ওঠেন। এই পুজোতে অনেক ভক্তই মানত করেন এবং মানত পূরণ হলে পুজোর খরচ বহন করেন। তবে পুজোর খরচ দিতে চাইলেই যে সঙ্গে সঙ্গে হবে, তা নয়৷ এ বছর যিনি প্রতিমা দেবেন বলে ঠিক করেছেন, তাঁর নম্বর আসবে বহু বছর পরে। এবছর পুটিমারি গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল রায়ের ওপর পুজোর ভার পড়েছে।

    উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘পুটিমারি গ্রামের এই বুড়িমার পুজোতে প্রতি বছরই যাই। এই পুজো ঘিরে দিনহাটার মানুষের আলাদা আবেগ রয়েছে।’’
  • Link to this news (এই সময়)