• ‘পুজো কার্নিভাল ক্ষমতার আস্ফালন!’, মমতা সরকারকে তীব্র কটাক্ষ অনীক-কমলেশ্বরের
    ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস | ০৯ অক্টোবর ২০২২
  • “মাল নদীতে অতগুলো মানুষ চলে গেল। এই অবস্থায় আমোদ করতে মন চায়?..” কলকাতার পুজো কার্নিভাল নিয়ে আগেভাগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন দেবদূত ঘোষ, অনীক দত্তর মতো বামপন্থী তারকারা। এবার সেই প্রেক্ষিতেই আরও একধাপ সুর চড়ালেন অনীক, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়রা। পরিচালকের মন্তব্য, “রেড রোডের এই দুর্গাপুজো কার্নিভালটা ক্ষমতার আস্ফালন ছাড়া কিচ্ছু নয়।”

    বরাবরই বামপন্থী মনোভাবাপন্ন অনীক দত্ত। যে কোনও ইস্যুতেই বিরোধী শিবির তৃণমূল কিংবা বিজেপিকে তুলোধনা করতে পিছপা হন না তিনি। ‘দিদি-মোদী’ সকলের উদ্দেশেই কটাক্ষবাণ ছাড়তে দেখা যায়। এবার পুজো কার্নিভাল নিয়েও রাজ্যের শাসকদলকে তুলোধনা করলেন টলিউড পরিচালক। অনীকের কথায়, “উত্তরবঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে তারপর এই ধরণের মোচ্ছবের কোনও মানে হয় না। এসবের মাঝে কার্নিভাল হওয়া নিয়ে আমি খুব হতবাক! এবং হতাশও। এই ধরণের কাজ এদের থেকেই কাম্য।”

    এখানেই অবশ্য থামেননি পরিচালক এও যোগ করেন যে, “এই কার্নিভালকে মোটেই সুন্দর বলে মনে হয় না। বরং এটা ক্ষমতার আস্ফালন। যতদিন তৃণমূল সরকার আছে, ততদিন এভাবেই চলবে। কারণ তৃণমূল এধরণের সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী। কার্নিভাল তকমাটাই তো গণ্ডগোলের! যে রেড রোডে কুচকাওয়াজ হয়, সেখানে পুজো কার্নিভাল কেন? এটা তো রিও ডে জেনেরিও নয় যে এখানে কার্নিভাল হওয়া কাম্য! এখানে ট্রাকে চড়ে ‘বলো দুগ্গা মা কি’ বলে আনন্দ করতে করতে বিসর্জনে যাওয়া হত। সেটাই বাংলার ঐতিহ্য। তা না করে এখানে রীতিমতো প্যারেড করে শক্তি প্রদর্শন করে আমাদের রাজ্যের শাসক দল। ওই ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়ার মতো। যা অত্যন্ত নিম্নরুচির।”

    টলিউডের আরেক পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, যাঁকে কিনা সিপিএমের বুকস্টলে হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা থেকে দিন দুয়েক আগেই তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ, তিনিও এই পুজো কার্নিভাল নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়লেন না। কমলেশ্বরের কথায়, “মাল নদীর ঘটনায় এত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, এত মানুষ বানভাসি, সেখানে এই আনন্দ উৎসব অত্যন্ত অপ্রয়োজনীয়। পাশাপাশি অমানবিকও। এসব দান-খয়রাতি করেই টাকা শেষ করছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টাকা নেই, ডিএ, মিড ডে মিল দেওয়া যাচ্ছে না। তাহলে এই ফাঁকা ভাঁড়ারে ব্যায়বহুল কার্নিভাল কীভাবে হচ্ছে?”

    এখানেই অবশ্য থামেননি দুই বামপন্থী তারকা। পুজো কার্নিভালের জন্য আন্দোলনরত চাকুরিপ্রার্থীদের একদিনের জন্য উঠে যাওয়ার বিষয়টি নিয়েও তীব্র নিন্দা করেছেন। কমলেশ্বরের মন্তব্য, “চাকরির দাবিতে যারা আন্দোলন করছেন দীর্ঘদিন ধরে, পুজোর কার্নিভালের জন্য তাদের উঠে যেতে বলাটা ভীষণ অমানবিক।” এপ্রসঙ্গে অনীক দত্তর প্রশ্ন, “কোনটা বেশি জরুরি, আন্দোলনকারীদের দাবি না রাজ্যের দেখনদারি? একদিনের জন্য় এভাবে আন্দোলন তুলে দেওয়া যায়? নিশ্চয় চাকরি প্রার্থীদের ভয় দেখানো হয়েছে।”
  • Link to this news (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)