নান্টু হাজরা: মালবাজারে বিসর্জনে গিয়ে হড়পা বানে ভেসে গিয়েছেন ৮ জন। সেকথা মাথায় রেখে জলপাইগুড়িতে বন্ধ দুর্গা পুজোর কার্নিভ্যাল। মালে স্বজন হারিয়ে মানুষ কাঁদছে। অথচ কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী কার্নিভ্যাল উপভোগ করছেন। শনিবার শিয়ালদহ স্টেশনে এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে এসে এভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন বিজেপির যুব মোর্চার আহ্বায়ক অঙ্কন দত্ত। বিজেপি নেতা বলেন, মালবাজারে যেসব মানুষে প্রাণ হারালেন তা যে প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে হয়েছে তার দায় কি উনি অস্বীকার করতে পারেন? যার গাফিলতিতে জড়িত, প্রশাসনের সেইসব লোকজনদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তা আমরা জানতে চাই।
আরও পড়ুন-
উল্লেখ্য, মালবাজারে হড়পা বানে ৮ জনের প্রাণ যাওয়ার পেছনে প্রশাসনকেই অনেকাংশে দায়ী করছে বিজেপি। শিয়ালদহ স্টেশনে বিজেপি যুব মোর্চার পক্ষে থেকে এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সেই কথাই তুলে ধরা হয়। কর্মসূচিতে এসে বিজেপির উত্তর কলকাতা ডিস্ট্রিক্টের সভাপতি সুরোজ কুমার সিং বলেন, প্রশাসনের গাফিলতিতে মাল নদীতে দুর্গাপুজোর বিসর্জনে গিয়ে এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল। যেখানে হাজারেরও বেশি মানুষ জড়ো হয়েছেন সেখানে মাত্র ৮ জন সিভিক ভল্যান্টিয়ার দেওয়া হয়েছিল। আমরা মনে করি ওখানকার জেলাশাসকের পদত্যাগ করা উচিত। শাশু তাই নয় প্রশাসনের যেসব লোক গাফিলতির সঙ্গে জড়িতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত।
উল্লেখ্য, বিজয়ায় নিরঞ্জনের সময়ে জলপাইগুড়ির মাল নদীতে নামেন বহু মানুষ। সেইসময় আচমকাই ছুটে আসে হড়পা বান। তাতেই ভেসে যান বহু মানুষ। ঘটনার পরই উদ্ধারে নামে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। শেষপর্যন্ত মোট ৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এর মধ্যে এক শিশুও রয়েছে। কয়েকদিন পাহাড়ে বৃষ্টি হওয়ার ফলেই আচমকা এই জলস্ফীতি বলে মনে করা হচ্ছে। একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে বহু মানুষ সাঁতার কেটে পাড়ে ওঠার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। কিন্তু জলের তোড়ের সঙ্গে পেরে উঠছেন না। মালবাজার মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান বলেন, 'বিসর্জনের সময় আমরা বারবার মাইকে ঘোষণা করেছিলাম নদীর মধ্যে যাবেন না। কিন্তু কিছু অতি উত্সাহী মানুষ নদীর মধ্যে চলে যান। সেই সময় হড়পা বান আসার ফলে কিছু মানুষ ভেসে যায়। অনেকেই আমরা উদ্ধার করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কিছু মানুষকে উদ্ধার করতে পারিনি। জলের স্রোত খুবই প্রবল ছিল। তার সঙ্গে পেরে ওঠা অসম্ভব ছিল।
মর্মান্তিক সেই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও। নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে দেওয়া হবে এই আর্থিক সাহায্য়। এর পাশাপাশি আহতদের প্রত্যেককে দেওয়া হবে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ। একই অঙ্কের আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকারও। নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দেওয়া হবে ২ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ। আর আহতদেরকে ৫০ হাজার টাকা।