মা মানসিক ভারসাম্যহীন। সম্পত্তির জন্য তাঁকে খুন করে বাড়ির দলিল নিয়ে পালাতে গিয়ে প্রতিবেশীদের হাতে ধরা পড়লেন বড় ছেলে। পুলিশ আটক করেছে অভিযুক্তকে। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাদাস কলোনি এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃতার নাম মঞ্জু মোহন্ত। ষাটোর্ধ্ব ওই মহিলার মানসিক সমস্যা ছিল। তাঁর তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে ছোট ছেলে সুবেদ মোহন্তও মানসিক ভারসাম্যহীন। মেয়ে রত্না বর্মণ বিবাহিতা। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, বড় ছেলে শ্রীকৃষ্ণ মহন্ত ওরফে পাপাই মাদকাসক্ত। দীর্ঘ দিন ধরে বসতবাড়ি বিক্রি নিয়ে মায়ের সঙ্গে তাঁর অশান্তি চলছিল। মায়ের উপর তিনি অত্যাচার চালাতেন। বেশ কয়েক বার প্রতিবেশীদের হস্তক্ষেপে সাময়িক ভাবে সমাধান হয় ঝামেলার।
জানা যাচ্ছে, শুক্রবার দুপুরে বাড়িতে ঢোকেন পাপাই। মায়ের গলায় দড়ি পেঁচিয়ে তাঁকে মারধর করেন তিনি। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে গিয়েছিলেন ওই বাড়িতে। তাঁরা দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছেন মঞ্জু। আর মেঝে থেকে তখন রক্ত মুছতে ব্যস্ত বড় ছেলে। প্রতিবেশীদের দেখেই বাড়ির দলিল নিয়ে পালাতে যান তিনি। তবে প্রতিবেশীরা তাঁকে ধরে ফেলেন। শ্রীকষ্ণকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়েরা। পাশাপাশি রক্তাক্ত মঞ্জুকে উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠান তাঁরা। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাপের বাড়ি আসেন মঞ্জু। তিনি বলেন, ‘‘সকালেই (শুক্রবার) বাড়িতে এসে মা-ভাইকে দেখে গিয়েছি। তখন দাদা বাড়ি বিক্রি করার কথা বলেছিল। আমি ওকে বাধা দিই। বলি, বাড়ি বিক্রি করে দিলে মানসিক ভারসাম্যহীন মা ও ভাই কোথায় গিয়ে থাকবে? তখনকার মতো আর কোনও কথা হয়নি। আমি শ্বশুরবাড়ি চলে যাই। কিছু ক্ষণ পর খবর পাই, মায়ের মৃত্যুর!’’ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভয়া বোস বলেন, ‘‘খুব খারাপ ঘটনা। খবর পেয়ে আমি ছুটে গিয়েছিলাম ওই বাড়িতে। মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। তাঁর আর এক ছেলেও মানসিক ভারসাম্যহীন। শোনা যাচ্ছে, বড় ছেলে সম্পত্তির জন্য মাকে খুন করেছেন। পুলিশ এসে অভিযুক্তকে আটক করেছে। আমরা ওঁর শাস্তি চাই।’’