প্রথম থেকেই বিয়েতে মত ছিল না মেয়ের। স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করে প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই ইচ্ছেকে উপেক্ষা করে মাস কয়েক আগে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন মা। বিয়ের পরেও মেয়ের ইচ্ছে ছিল পড়াশোনা চালিয়ে যাবে সে। তাতে আপত্তি তুলে সেই নাবালিকা মেয়ের চুল কেটে শাস্তি দিলেন মা এবং স্বামী। নদিয়ার ধুবুলিয়া থানা এলাকার ঘটনা। নাবালিকার উপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হন প্রতিবেশী। তার ভিত্তিতে বাল্যবিবাহ এবং পকসো আইনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত স্বামীকে। মায়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে খবর পুলিশ সূত্রে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়ার কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানা এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালিকার সঙ্গে ধুবুলিয়া থানা এলাকার এক যুবকের বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিয়ের পরেও পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার শর্তেই বিয়েতে রাজি হয়েছিল নাবালিকা। কিন্তু বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই নাবালিকার স্কুল ও টিউশন বন্ধ করে দেন তার স্বামী। সেখান কোনও ক্রমে মায়ের বাড়ি পালিয়ে আসে নাবালিকা। সেখানে মা এবং স্বামী মিলে ওই নাবালিকার চুল কেটে দেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগকারী প্রতিবেশী বলেন, ‘‘শত কষ্টের মধ্যেও মেয়েটি শুধু পড়তে চেয়েছিল। লজ্জায় যাতে মুখ দেখাতে না পারে, সেই জন্য ওর মা আর স্বামী মিলে জোর করে চুল কেটে নেয়। পড়তে চাওয়ার জন্য যে এত বড় শাস্তির মুখে পড়তে হবে, আধুনিক সমাজে এর থেকে লজ্জার আর কিছু নেই। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিক।’’
কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার কে অমরনাথ বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত চলছে। নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে যত জন অভিযুক্ত, প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনের কঠোরতম শাস্তির সুপারিশ করবে পুলিশ।’’