• স্ত্রী এবং বৌদিকে হত্যা করেছেন তিনিই! জেরায় স্বীকার করেছেন প্রসূন দে, ট্যাংরাকাণ্ডে দাবি পুলিশের
    আনন্দবাজার | ০১ মার্চ ২০২৫
  • নিজের স্ত্রী এবং বৌদিকে তিনিই খুন করেছেন। অবশেষে তা স্বীকার করলেন প্রসূন দে! এমনই দাবি করল পুলিশ। শুধু তা-ই নয়, হাত কাটার রহস্যও ভেদ হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের। প্রথমে প্রসূন দাবি করেছিলেন, সুদেষ্ণা দে এবং রোমি দে নিজেরাই নিজেদের হাত কেটেছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই দাবি থেকে সরে এলেন তিনি। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় প্রসূন দুই বধূর হাত কাটার কথা স্বীকার করেছেন।

    ট্যাংরায় দে পরিবারের খুনের ঘটনা রহস্যে ঘেরা। দে পরিবারে নিহত তিন মহিলার মৃত্যু কী ভাবে হল, কে তাঁদের খুন করলেন, এমন নানা প্রশ্ন ঘুরছে। তদন্তকারীদের আতশকাচের নীচে প্রথম থেকেই রয়েছেন প্রসূন, তাঁর দাদা প্রণয় এবং কিশোর প্রতীপ দে। প্রণয়, প্রসূন এখন কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে ভর্তি। সেখানেই তাঁদের বার বার জেরা করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় অবশেষে খুনের কথা স্বীকার করেছেন প্রসূন। তিনি পুলিশকে জানান, প্রথমে তাঁর স্ত্রী রোমি নিজেই হাত কাটার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি। তখন প্রসূন এসে রোমির মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হাত কাটেন। পরে বৌদি সুদেষ্ণারও হাত তিনিই কাটেন বলেও দাবি করেছেন প্রসূন।

    গোটা ঘটনার সময় প্রণয় এবং তাঁর পুত্র প্রতীপ বাড়ির উপরের তলার ঘরে ছিলেন বলেও পুলিশের কাছে দাবি করেন প্রসূন। পরে তিনি প্রতীপকে ডেকে পাঠান। তার পর তার হাতও কাটেন। প্রণয় আগে দাবি করেন, হাত কাটার পরিকল্পনা ছিল প্রসূনের। তিনি ভয়ে নিজের হাত কাটতে পারেননি। মহিলাদের যখন হাত কাটা হয়, তখন তিনি বাড়ির অন্যত্র ছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, প্রসূনের নতুন বয়ানে প্রণয়ের দাবিই মান্যতা পেল। যদিও ঘটনায় তাঁর এবং প্রতীপের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তিন জন মৃতের নমুনা ভিসেরা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

    গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ট্যাংরার অটল শূর রোডের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় তিনটি মৃতদেহ। দে পরিবারের দুই বধূ রোমি, সুদেষ্ণা এবং কিশোরী প্রিয়ম্বদাকে খুন করা হয়েছে বলে জানা যায় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে। ওই দিনই ভোরে বাইপাসের ধারে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল। তাতে ছিলেন দে পরিবারের দুই ভাই প্রণয়, প্রসূন এবং প্রতীপ। পুলিশ জানতে পেরেছে, কিশোরকে গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন দুই ভাই। কিন্তু প্রতীপ তাতে রাজি হয়নি। পুলিশি জেরার মুখে দুই ভাই দাবি করেছেন, আর্থিক সমস্যার কারণে তাঁরা সপরিবার আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্রতীপও দাবি করে, তার কাকা প্রসূনই পরিবারের তিন সদস্যকে খুন করেছেন। এখনও দুই ভাইকে হেফাজতে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি পুলিশ। তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠলে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে এ বিষয়ে পুলিশ পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)