• দেদার ডিজে কার্নিভালে, প্রশ্নে পুলিশ
    আনন্দবাজার | ০৯ অক্টোবর ২০২২
  • মঞ্চে বসে রয়েছেন প্রশাসন ও পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। অথচ, তাঁদের সামনে দিয়ে চলা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজে বাজিয়ে চলছে উদ্দাম নাচ। প্রশাসনের তালিকাভুক্ত নয়, এমনও একাধিক পুজো ডিজে বাজাতে বাজাতে প্রতিমা নিয়ে ঢুকে পড়ছে সেই শোভাযাত্রায়। আর রাস্তার দু’ধারে কাতারে কাতারে মানুষের ভিড় সামলাতেই ব্যস্ত পুলিশ। ফলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাজতে থাকা ডিজে বন্ধ করারও কেউ নেই। যার জেরে সরকারি উদ্যোগে জেলায় প্রথম দুর্গাপুজোর কার্নিভালে পুলিশ-প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কতটা ছিল, তা নিয়েও আলিপুরদুয়ারে উঠল প্রশ্ন। শুক্রবার দিনহাটা শহরের কার্নিভালেও পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ডিজে বেজেছে বলে অভিযোগ। মালবাজারের ঘটনার পর প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে আলিপুরদুয়ার ও দিনহাটায় এমন উল্লাস দেখে ক্ষুব্ধ অনেকেই।

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকাল চারটেতে আলিপুরদুয়ার শহরের প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে কার্নিভাল শুরুর সময় ছিল। যার জেরে প্রশাসনের তালিকাভুক্ত প্রায় পনেরোটি পুজো কমিটিকে দুপুর তিনটের মধ্যে সেখানে পৌঁছে যেতে বলা হয়। কিন্তু অভিযোগ, বেশির ভাগ পুজো কমিটিই অনেক দেরিতে প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছায়। ফলে কার্নিভাল শুরু করতে সন্ধ্যা ছয়টা বেজে যায়। আরও অভিযোগ, কার্নিভালের একেবারে শুরুতে থাকা পুজোর শোভাযাত্রায় কোনও ডিজে ছিল না। কিন্তু এক তৃণমূল নেতার পুজো বলে পরিচিত শহরের একটি পুজোর শোভাযাত্রায় প্রথম ডিজে দেখা যায়। তার পরে অবশ্য বক্সা-ফিডার রোড ধরে এগিয়ে চলা একাধিক পুজো কমিটির শোভাযাত্রায় ডিজে বাজে বলে অভিযোগ। তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার টাউন ব্লক সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কার্নিভালে কোথাও ডিজে বাজতে দেখিনি। সবাইকে নিয়ম মেনে বক্স বাজাতে দেখেছি। কেউ কেউ মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।” আলিপুরদুয়ারের এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “কার্নিভাল দেখতে বক্সা-ফিডার রোডে যে সংখ্যায় মানুষের ভিড় হয়েছিল, তাতে সেই ভিড় সামাল দিয়ে ওই সময় কোনও শোভাযাত্রার ডিজে বন্ধ করা সম্ভব ছিল না।”

    সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে পুলিশ ও পুরসভার আধিকারিকদের উপস্থিতিতে দিনহাটা শহরের কার্নিভালেও শুক্রবার ডিজে বাজে বলে অভিযোগ। স্থানীয় পুরসভার উদ্যোগে সেখানে এই কার্নিভাল করা হয়। যাতে পনেরোটি পুজো কমিটি অংশ নিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ ও পুরসভার আধিকারিকদের উপস্থিতিতে কার্নিভালে ডিজে বাজানো নিয়ে দিনহাটাতেও প্রশ্ন উঠেছে। দিনহাটার পাঁচ মাথার মোড়ে বিশেষ মঞ্চ বানানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। পুজোর কার্নিভালে বেশ কয়েকটি পুজো কমিটির শোভাযাত্রায় ডিজে বাজানো ও চটুল গান নিয়ে তার চোখে মুখেও বিরক্তির ছাপ দেখা যায়।

    সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শুভ্রালোক দাসের অভিযোগ, “কার্নিভালে কী করা উচিত, তা পুজো কমিটিগুলিকে বোঝাতে পারেননি আয়োজকরা।” দিনহাটা পুরসভার চেয়ারম্যান গৌরীশংকর মাহেশ্বরী জানান, যারা নির্দেশ অমান্য করে ডিজে বাজিয়েছে, তারা কার্নিভালের পুরস্কার পাবেন কী না, সেটা অবশ্য বিচারকরা বিবেচনা করে দেখবেন।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)