• হস্তশিল্প সামগ্রী দিয়ে মণ্ডপ সজ্জার জন্য কিছু অর্থলাভ দরিদ্র শিল্পী, বিক্রেতাদের
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২২
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: পরিবেশ বিধির জেরে এবার পুজোর মণ্ডপে থার্মোকল, প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল নিষিদ্ধ। মণ্ডপ সাজাতে তাই বেশিরভাগ উদ্যোক্তা বেছে নিয়েছিলেন গ্রাম বাংলার প্রাচীন সংস্কৃতির বাহক বেতের কুলো, ঝুড়ি, গামলা, তালপাতার হাতপাখাকেই। নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রাম বাংলার একদা বহুল ব্যবহৃত সামগ্রীগুলি পরিচিত হল মণ্ডপসজ্জার মধ্য দিয়েই। আর এর জেরেই এই সব সামগ্রী প্রস্তুতকারী দরিদ্র পরিবারগুলির মুখে হাসি ফুটল। শুধু বাংলা নয়, পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ডের বহু গ্রামের মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে পুজোর আগে এই সামগ্রীগুলির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায়। 

    ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন গ্রাম থেকে এই সামগ্রী গুলি সংগ্রহ করে আসানসোল বাজারে বিক্রি করেন ইয়াসুরুদ্দিন, তাজো আনসারি, হারুণ শেখরা। তাঁদের হাত ধরেই দুর্গাপুজোর মণ্ডপে গিয়েছে এই সামগ্রীগুলি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওইসব বিক্রেতারা জানিয়েছেন, করোনা কালের পর মা মুখ চেয়ে দেখেছেন বলেই পরিবারের সদস্যদের দু’বছর পর নতুন জামা কাপড় কিনে দিতে পেরেছি।

    ইয়াসুরুদ্দিন বলেন, এমনিতেই বাড়িতে হাত পাখা, কুলো, বেতের বাসনপত্রের ব্যবহার কমে গিয়েছে। করোনা কালে বিক্রি বন্ধ ছিল। না খেতে পেয়ে থাকতে হয়েছে এই সামগ্রীগুলি তৈরি করা বহু পরিবারকে। এবার পুজোমণ্ডপ সাজাতে ব্যাপক বিক্রি হয়েছে এই সামগ্রীগুলি। তাই পুজো উপলক্ষে আমাদের বাড়তি উপার্জন হল।  একটা সময়ে বাংলার ঘরে ঘরে দেখা মিলত কুলোর। তার আগেই শহুরে বাঙালির ঘর থেকে হারিয়ে গিয়েছিল বেতের গামলা, বাটি। এবার পুজোর সেই সব হারিয়ে যেতে বসা সামগ্রীরই বহুল ব্যবহার দেখল নতুন প্রজন্ম।  

    আসানসোল দক্ষিণ থানার উল্টোদিকেই এইসব পসরা বহু বছর ধরে বিক্রি হয়ে আসছে। আসানসোল বড়বাজারে এগুলি বিক্রি করে বাড়তি উপার্জনের স্বপ্ন দেখেন বাগদাহা, চাপুড়িয়া, নালা, পুণ্ডহিতের মতো বহু গ্রামের মানুষ। সেখানকার মানুষ সেগুলি প্রস্তুত করে। জিটি রোডের পাশেই পসরা সাজিয়ে সেগুলি বিক্রি করা হয়। পুজোর আগে এইসব সামগ্রীর চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অনেকের মুখে হাসি ফুটেছে। দুর্গাপুজোর আনন্দের হাটে ওরাও ঘরে নিয়ে যেতে পেরেছে দু’টো বাড়তি পয়সা। দুর্গাপুজোকে ঘিরে বিরাট ব্যবসার সুফল পেয়েছে ঝাড়খণ্ডও।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)