স্মার্টফোনই নেই, অ্যাপে কীভাবে তৈরি হবে রেজিস্টার, চিন্তায় পার্শ্বশিক্ষকরা
বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২২
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পার্শ্বশিক্ষকদের চাইল্ড রেজিস্টার করতে হবে নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে। শিক্ষাদপ্তরের এই নির্দেশে শোরগোল পড়েছে পার্শ্বশিক্ষকদের মধ্যে। এর বিরোধিতা করে বিভিন্ন জেলায় তো বটেই, বিকাশ ভবনেও স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে এই নির্দেশ প্রত্যাহার করুক দপ্তর। অথবা সরকারি খরচে সবাইকে স্মার্টফোন কিনে দেওয়া হোক।
শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, স্কুলের বাইরে থেকে যাওয়া শিশুদের নথি তৈরি বাধ্যতামূলক। এই আইন বলছে, কোনও শিশু শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারে না। তাই প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলগুলির দায়িত্ব, এলাকার শিশুদের একটি রেজিস্টার তৈরি করা। সেই কাজ মূলত পার্শ্বশিক্ষকদের দিয়েই করানো হয়ে থাকে। তবে এবার রাজ্য সরকার একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে। বিভিন্ন জেলায় তা নিয়ে প্রশিক্ষণও দিয়েছে। ১১ অক্টোবর থেকে এই কাজ শুরু করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কিছু জেলা। শেষ করতে হবে একমাসের মধ্যে। আপত্তি কোথায়? পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, ইপিএফ কেটে আমরা বেতন হিসেবে হাতে পাই ১২ হাজার টাকা। একটি ভালো স্মার্টফোন কিনতে একমাসের বেতনও যথেষ্ট নয়। প্রাথমিকের পার্শ্বশিক্ষকদের ক্ষেত্রে পিএফ কেটে এই বেতন ন’হাজারের কিছু বেশি। তাই পার্শ্বশিক্ষকদের হাতে হাতে স্মার্টফোন নেই। এখন অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও রেজিস্টার তৈরি করতে গেলে শিক্ষকদের তা বাধ্য হয়ে কিনতে হয়। অনেকে স্মার্টফোন ব্যবহার করতেও পারেন না। তাঁর বক্তব্য, স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেটের বাড়তি খরচ সরকার দিলে তবেই এই কাজ করা সম্ভব। উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের স্মার্টফোন দেওয়া গেলে পার্শ্বশিক্ষকদের তা কেন দেওয়া যাবে না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। এর পাশাপাশি, নিজস্ব এলাকার বাইরে শিক্ষকদের রেজিস্টারের কাজ না দেওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। বিকাশ ভবনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, এই অ্যাপ এখনই চালু হচ্ছে কি না, তা বলা কঠিন। তবে স্মার্টফোন না থাকলে সেই শিক্ষকদের অনলাইন রেজিস্টার তৈরির কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।