নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিকেলের পড়ন্ত বেলায় সুসজ্জিত রেড রোড তখন মায়াবী আলোয় ভাসছে। বাইকে দাঁড়িয়ে এক পুলিসকর্মী ঢাক বাজাচ্ছেন। বাইক ছুটে চলেছে রেড রোড ধরে। শুরুর এই দৃশ্যই বুঝিয়ে দিল, দু’বছর পর আয়োজিত দুর্গা কার্নিভাল কতখানি অভিনব ও আকর্ষণীয় হতে চলেছে। উৎসাহ, উদ্দীপনায় ভরপুর প্রায় পাঁচ ঘণ্টা কেটে গেল নিমেষে। শনিবারের শহর সাক্ষী থাকল ঐতিহাসিক দুর্গা কার্নিভালের। বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি, জীবনবোধের অপূর্ব মেলবন্ধন দেখে বিস্মিত হলেন বিস্মিত হলেন বিদেশি অভ্যাগতরা। মাতৃমূর্তির পরিক্রমায় মিশল ধুনুচির ধোঁয়া, ঢাকের বোল, নৃত্যের ছন্দ। চেয়ারে নিজেকে আটকে রাখতে পারলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। একটা সময় তিনি নিজেই শামিল হলেন নৃত্য-গীতে।
শুরুটা হয়েছিল ২০১৬ সালে। সেই থেকে শারদোৎসবের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে এই কার্নিভাল। মাঝে গত দু’বছর করোনার কারণে বন্ধ ছিল। ইতিমধ্যে দুর্গাপুজোকে ‘আবহমান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ তালিকাভুক্ত করে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। সেই প্রাপ্তির উদযাপন বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে শোভাযাত্রায়।
বিকেল সাড়ে চারটে থেকে শুরু হয় কার্নিভাল। মোট ৯৪টি প্রতিমা শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছিল। বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে জানাতে রেড রোড দিয়ে হেঁটে মঞ্চে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমেই ছিল আলিপুর বডিগার্ড লাইনসের প্রতিমা। তার আগেই পুলিসকর্মীদের ‘পারফরম্যান্স’ মুগ্ধ করেছে সবাইকে। ৭৫ বছরে পা দেওয়া কলেজ স্কোয়ারের পুজো জাতীয় পতাকা নিয়ে কার্নিভালে শামিল হয়ে স্বাধীনতার ৭৫ বছরও স্মরণ করেছে। হিন্দুস্থান পার্ক পুজো কমিটির প্রদর্শনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাজে হাজির এক খুদে। তাঁকে মঞ্চে ডেকে চকলেট ধরিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য নাচলেন ধানের ছড়া ও ধুনুচি নিয়ে।