• চাকরি হারিয়েও কেন স্কুলে যাচ্ছেন শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের একাংশ? শিক্ষাকর্তাদের বিরুদ্ধে অবমাননার নোটিস ববিতাদের
    আনন্দবাজার | ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • এ বার রাজ্যের শিক্ষা দফতরের সচিব, শিক্ষা দফতরের কমিশনার, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) চেয়ারম্যান এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে আদালত অবমাননার আইনি নোটিস পাঠানো হল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েও বেশ কিছু শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী এখনও স্কুলে যাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে’ সরকার পোষিত এবং সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের ২৫,৭৩৫ জনের চাকরি বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে আইনি নোটিস পাঠানো হল শিক্ষা দফতর এবং এসএসসির আধিকারিকদের। সেই নোটিস দিলেন এসএসসি মামলার মূল মামলাকারী ববিতা সরকার, সেতাব উদ্দিন, নাসরিন খাতুন, লক্ষ্মী তুঙ্গা এবং আব্দুল গনি আনসারি। তাঁদের হয়ে আইনি নোটিস পাঠালেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এবং গোপা বিশ্বাস।

    প্রসঙ্গত, এই ববিতার আবেদনে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি গিয়েছিল। সেই চাকরি পেয়েছিলেন ববিতা। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তিনিও চাকরি হারান। সেই চাকরি পান শিলিগুড়ির অনামিকা রায়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন অনামিকাও।

    সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বাতিল হয়েছে ২০১৬ সালের এসএসসির সম্পূর্ণ নিয়োগ প্যানেল। চাকরি হারিয়েছেন সরকার পোষিত এবং সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের ২৫,৭৩৫ জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। অভিযোগ, ওই নিয়োগপ্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে। সাদা ওএমআর শিট জমা দিয়েও অনেকে চাকরি পেয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি যাওয়ার পরে সমস্যায় পড়ে রাজ্যের সরকার পোষিত এবং সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলি। অনেক স্কুলেই একের বেশি শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে গিয়েছে। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজি ইন্ডোরের সভায় চাকরিহারা শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের স্কুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তা ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে শিক্ষা দফতর সেই নিয়ে কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা দেয়নি। ওই শিক্ষকদের স্কুলে যোগদানের বিষয়ে কোথাও স্পষ্ট ভাবে তাদের তরফে কিছু জানানো হয়নি। এর ফলে অনেক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন। তার মধ্যে রাজ্যের সরকার পোষিত এবং সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে স্থিতাবস্থা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তাদের আবেদন ছিল, যত দিন না নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হচ্ছে তত দিন, অথবা চলতি শিক্ষাবর্ষের শেষ পর্যন্ত ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের চাকরিতে বহাল রাখা হোক। সেই আবহে স্কুলে যাচ্ছিলেন অনেক শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী।

    সেই শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা কেন স্কুলে যাচ্ছেন, তা নিয়ে আইনি নোটিস পেলেন শিক্ষা দফতরের সচিব বিনোদ কুমার, শিক্ষা দফতরের কমিশনার অরূপ সেনগুপ্ত, স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁদের নোটিস দিলেন মূল মামলাকারীদের আইনজীবীরা। ৯ এপ্রিল পাঠানো হয়েছিল নোটিসটি। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে যে সব ওএমআর শিট রয়েছে, সেগুলো যেন এসএসসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

    এর আগে চাকরি বাতিল প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে ‘মন্তব্য’ করার অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আদালত অবমাননার আইনি নোটিস দিয়েছিলেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ দত্ত।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)