সংবাদদাতা, বারুইপুর: কালীপুজো উপলক্ষে জমজমাট বাজির বাজার। লাখে লাখে আতসবাজি মজুত করেছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ দাহ্য পদার্থে ঠাসা দোকানগুলিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ উঠছে। রাজ্যের অন্যতম বড় বাজি বাজার বলে পরিচিত বারুইপুরের চম্পাহাটির হাড়াল। এই বাজারের অধিকাংশ বাজির দোকানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা বলে অভিযোগ। দোকানগুলোতে রাখা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রগুলির (সিলিন্ডার) মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। অধিকাংশ দোকানদার ফায়ার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করাননি বলেও অভিযোগ। তবে হাড়াল বাজি ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্য অর্জুন মণ্ডল বলেছেন, ‘নতুন করে সিলিন্ডার রিনিউ করা হবে খুব তাড়াতাড়ি। আর সবুজ বাজি চালুর বিষয়ে কোনও বার্তা না পেলে অগ্নি নির্বাপক শংসাপত্রের রিনিউয়াল সম্ভব হচ্ছে না। আমরা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি।’ বারুইপুর পূর্বের বিধায়ক বিভাস সর্দার বলেছেন, ‘আমি এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলব।’
চম্পাহাটির হাড়াল চিনের মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রায় গোটা রাস্তাটির দু’ধারে বাজির দোকান বসে। কালীপুজোর কয়েকদিন আগে থেকে এই বাজার জমজমাট থাকে। চম্পাহাটি, বেগমপুর, সাউথ গড়িয়া, রামনগর ২ নম্বর পঞ্চায়েতের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই পেশার সঙ্গে জড়িত। ওই বাজারে গিয়ে জানা গিয়েছে, বহু দোকানে সিলিন্ডার ঝুলছে বটে তবে সেগুলির মেয়াদ ২০২০ সালে শেষ হয়ে গিয়েছে। কোনও কোনও দোকানে আবার সিলিন্ডারের মেয়াদ ২০১৮ সালেই শেষ হয়ে গিয়েছে। বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেছেন, ‘সব দোকানে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা নেই। একাধিকবার সাবধান করা সত্ত্বেও বহু ব্যবসায়ী কোনও কথার গুরুত্ব দেন না। অবস্থা এমন হয়েছে যে, আগুন লাগলে দমকলকে খবর দিতে দিতে সব শেষ হয়ে যাবে। যে কোনও দিন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’ বাজি ব্যবসায়ী সমর ঘোষ বলেন, ‘ফায়ারের শংসাপত্রের রিনিউয়ালের জন্য বারুইপুর দমকল কেন্দ্রে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ হয়নি। আমরাও চাই তাড়াতাড়ি রিনিউয়াল করে নিতে। কিন্তু হচ্ছে না।’ ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেছেন, ‘এখানে দমকল কেন্দ্রের জন্য চিনের মোড় থেকে দু’কিলোমিটার দূরের একটি জায়গা বাছা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দমকল কেন্দ্রটি তৈরি হয়নি। ফলে বারুইপুর থেকে দমকলের গাড়ি আসার উপর বাধ্য হয়ে অপেক্ষা করতে হয়।’
সবমিলিয়ে বিপদ সীমার কান ঘেঁষে এই বাজারে ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ তুলছেন ব্যবসায়ীরা। চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ এই এলাকার বাসিন্দাদের। এই অব্যবস্থা ঠিক করতে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ করার অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিকরা।