• নিখোঁজ সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীর দেহ উদ্ধার, পুলিসি অসহযোগিতায় উত্তপ্ত জাঙ্গিপাড়া ধর্ষণ-খুনের অভিযোগ পরিবারের
    বর্তমান | ০৯ অক্টোবর ২০২২
  • সংবাদদাতা, তারকেশ্বর: দশমীর সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ স্কুল পড়ুয়া এক নাবালিকার দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল জাঙ্গিপাড়া থানার রাধানগর পঞ্চায়েত এলাকায়। শনিবার সকালে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দুরে শ্রীহট্ট এলাকার একটি পুকুর থেকে মেলে ওই নাবালিকার মৃতদেহ। স্কুল পড়ুয়া নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিসের তরফে মিলেছে চরম অসহযোগিতা, এই এই অভিযোগ তুলে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন পরিবার ও এলাকার লোকজন। পাশাপাশি ছাত্রীকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে, সে অভিযোগ তুলেও দেহ উদ্ধার করতে আসা পুলিস কর্মীদের ঘেরাও করে স্থানীয় মানুষ। বিক্ষোভের জেরে প্রায় চার ঘণ্টা আটকে থাকার পর নাবালিকার মৃতদেহটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিস। পরিবারের তরফ থেকে অসহযোগিতার অভিযগে মেলার পর থানার সেই সময়ের ডিউটি অফিসারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিস সূত্রে খবর, এরই পাশাপাশি গোটা ঘটনার তদন্তে একজন স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে।  

    হুগলি গ্রামীণ জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার লাল্টু হালদার বলেন, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ছাত্রীর পরিবারের তরফে দায়ের করা ধর্ষণ-খুনের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, বাগুঽআটি কাণ্ডের পর রাজ্য পুলিসের সর্বোচ্চস্তর থেকে ‘নিখোঁজ’ হওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলিকে আরও সক্রিয় হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সে কথা যে নিছকই উপরতলার রুটিন নির্দেশ, কলকাতার হরিদেবপুরের পর জাঙ্গিপাড়ার পাড়ার ঘটনা ফের তা প্রমাণ করছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,  তারকেশ্বরের একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল ওই নাবালিকা। দশমীর সন্ধ্যায় সে ভাই-বোনকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিমা দর্শনে বের হয়। এরপর বাড়ির কাছের একটি পুজো মণ্ডপে ভাই-বোনকে বসিয়ে রেখে সে অন্যত্র চলে যায়। তারপর থেকে নাবালিকার আর কোনও খোঁজ মিলছিল না। স্থানীয়স্তরে খোঁজাখুঁজির পর বিষয়টি জাঙ্গিপাড়া থানায় জানানো হয়। পরিবারের অভিযোগ, সেই সময় পুলিসের কোনও সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। উল্টে তাদের বলা হয়, মেয়ে কোথাও গিয়ে বিয়ে করেছে, মিষ্টিমুখ করুন! এর দু’দিন পর নেওয়া হয় নিখোঁজ ডায়েরি।  এরপর এদিন সকালে নাবালিকার মৃতদেহ মিললে তুমুল উত্তেজনা দেখা দেয় এলাকায়। পুলিসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন গ্রামবাসীরা। ঘটনাস্থলে যান হুগলি গ্রামীণ জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার। 

    নাবালিকার কাকিমার অভিযোগ, পুলিস সহযোগিতা করলে, আজ এই ঘটনা ঘটত না। নিখোঁজ অভিযোগ জানাতে গেলে গুরুত্ব না দিয়ে, উল্টে দুর্ব্যবহার করেছে পুলিস। আমাদের ধারণা, ধর্ষণ করে মেয়েকে খুন করা হয়েছে। দোষিদের উপযুক্ত শাস্তি চাই। ঘটনার তদন্তে মৃত নাবালিকার বাড়িতে যায় এসডিপিও উৎসা শ্রীমনি। বাড়িতেও পুলিসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয় গ্রামবাসী। অতিরিক্ত পুলিস সুপার জানিয়েছেন, পুলিসের বিরুদ্ধে অসহযোগিতা ও দুর্ব্যবহার করার যে অভিযোগ উঠছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। মৃত্যুর কারণ সন্ধানে সব কিছু তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)