• ধর্ষণ করেই খুন! ক্ষোভ নাবালিকার মৃত্যু ঘিরে, কংগ্রেস প্রতিনিধি দলকে তাড়া জাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দাদের
    আনন্দবাজার | ০৯ অক্টোবর ২০২২
  • জলাশয় থেকে নাবালিকার দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে রবিবারও উত্তেজনা অব্যাহত হুগলির জাঙ্গিপাড়ার শ্রীহট্ট এলাকায়। শনিবার শ্রীহট্ট এলাকার একটি ঝিল থেকে উদ্ধার করা হয় ওই কিশোরীর দেহ। কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। দশমীর রাত থেকে নিখোঁজ ছিল সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রী। রবিবার এলাকায় যায় কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দল। ওই দলটিকে গ্রামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। কংগ্রেস নেতাদের তাড়া করেন গ্রামবাসীদের একাংশ। কিছু পরে শ্রীহট্ট গ্রামে যায় বিজেপির প্রতিনিধি দলও।

    রবিবার সকালে শ্রীহট্ট গ্রামে যান হুগলি জেলা কংগ্রেসের ১২ জনের একটি প্রতিনিধি দল। তাঁদের দেখামাত্র ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁরা ওই প্রতিনিধি দলটিকে তাড়া করেন। ক্ষোভের মুখে পড়ে গ্রামে ঢুকতে পারেননি কংগ্রেসের ওই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁরা এই মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি চান না। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে এক জন বলেন, ‘‘ঘটনার সময় কাউকে পাশে পাওয়া যায়নি। এখন ওরা লাশের রাজনীতি করতে এসেছে।’’

    বিজলী টুডু নামে ওই গ্রামের এক মহিলা বলেন, ‘‘এখানে রাজনীতি করা যাবে না। আমরা বিচার চাই। কোনও পার্টি এখানে এলে হবে না। যে আসবে তাকে মেরে থেঁতো করে দেব। আজ লক্ষ্মীপুজো। অথচ ঘরের লক্ষ্মী চলে গিয়েছে। গ্রামের মহিলারা ক্ষেপে গিয়েছে।’’

    নাবালিকার জেঠু বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলকে আমরা গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছি না। যখন মেয়েটি হারিয়ে গিয়েছিল তখন কোনও দল আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। এখন ওদের আসার প্রয়োজন নেই। প্রশাসন যা করার করছে।’’

    শেষ পর্যন্ত পুলিশি প্রহরায় গ্রাম ছাড়েন কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। প্রতিনিধি দলে থাকা উত্তরপাড়ার কংগ্রেস কাউন্সিলর কামাখ্যা সিংহ বলেন, ‘‘ওদের জন্য আমরা এসেছিলাম। কিন্তু মানুষকে আমরা বোঝাতে পারিনি।’’

    জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে বলা হয়েছে দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বার করতে হবে। আইনত চরমতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিরোধী দল আসতেই পারে। কিন্তু অযথা মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়। বিরোধী দল একটা মিথ্যার রাজনীতি করবে সেটা গ্রামবাসীরা মানবেন কেন? কারা গ্রামবাসীদের সঙ্গে পাশে আছেন তা তাঁরা বুঝতে পেরেছেন বলেও হয়তো বাধা দিয়েছেন।’’

    নাবালিকার পরিবারের দাবি, সে নিখোঁজ হওয়ার সময় তার কাছে একটি সাইকেল ছিল। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেই সাইকেলটির খোঁজ পাওয়া যায়নি। রবিবার সেই সাইকেলের খোঁজ করা হয় গ্রামের বিভিন্ন জলাশয়ে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীদের নামিয়ে। পাশাপাশি, ড্রোনের সাহায্য এলাকার বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। গ্রামবাসীদের দাবি মেনে শনিবার সন্ধ্যার পর পুলিশ-কুকুর দিয়েও তল্লাশি চালানো হয় এলাকায়। জাল ফেলা হয় পুকুরেও। নাবালিকার সাইকেলটি খুঁজে পাওয়া গেলে তদন্তে আরও গতি আসবে বলে মনে করছে পুলিশ। হুগলি গ্রামীণের পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানা যাবে মৃত্যুর কারণ। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)