• স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের হল হাই কোর্টে, বিধি নিয়েও তোলা হল প্রশ্ন
    আনন্দবাজার | ০৪ জুন ২০২৫
  • স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হল কলকাতা হাই কোর্টে। মামলা দায়ের হয়েছে এসএসসির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত বিধির বিরোধিতা করে। মঙ্গলবার বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন। আগামী ৫ জুন শুনানির সম্ভাবনা।

    দিন তিনেক আগেই ২০১৬ সালের চাকরিহারাদের নিয়োগের পরীক্ষার নতুন বিধি প্রকাশ করেছে এসএসসি। নতুন পরীক্ষাবিধিতে নানা বদল আনা হয়েছে। এর পরেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। মামলাকারীদের দাবি, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিধি ২০১৬ সালের মতোই করতে হবে। ২০২৫ সালের নিরিখে ন’বছর আগের নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিধি নির্ধারণ করা অযৌক্তিক। শুধু তা-ই নয়, ২০১৬ এবং ২০২৫ সালের নম্বরের তুলনা করলে দেখা যাবে, আগে ৫৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হত। সেখানে এখন ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়াও, চাকরিপ্রার্থীদের যোগ্যতা মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আরও নানা মাপকাঠি সংযোজন করা হয়েছে। যেমন, শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর উপরেও থাকছে নির্দিষ্ট নম্বর। ফলে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা, যাঁরা আগে অপেক্ষমাণ তালিকায়, অর্থাৎ ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন, তাঁরা যোগ্যতার দৌড়ে পিছিয়ে পড়বেন বলে আশঙ্কা। সে কারণেই এসএসসির সর্বশেষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন মামলাকারীরা।

    আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের কথায়, ‘‘যদি শিক্ষকতার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ১০ নম্বর দেওয়া হয়, বঞ্চিতেরা তা হলে কি বঞ্চিত হয়েই থেকে যাবেন? তাঁদের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া ৯০ নম্বরের, বাকিদের জন্য ১০০ নম্বরের, এমনটা তো হতে পারে না। তাই ২০১৬ সালের নিয়মের ভিত্তিতেই পরীক্ষা নিতে হবে। অনলাইনে আবেদন শুরু হওয়ার আগেই এই মামলার শুনানি হওয়া প্রয়োজন।’’ তিনি জানিয়েছেন, মামলাকারীরা রি-প্যানেলের দাবি করছেন। এঁদের বেশির ভাগই দ্বিতীয় বার পরীক্ষায় বসতে চান না। অন্য দিকে, বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আন্দোলনরত চাকরিহারারাও। তাঁদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে এসএসসির নয়া বিধির বিরোধিতা করছেন তাঁরাও।

    প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশমতো গত বৃহস্পতিবার নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে এসএসসি। নয়া পরীক্ষাবিধিতে বলা হয়েছে, এ বার ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে, আগে যা ৫৫ নম্বরের ছিল। শিক্ষাগত যোগ্যতার উপরে ৩৫ নম্বরের পরিবর্তে থাকছে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর। ইন্টারভিউয়ের ক্ষেত্রে ১০ নম্বর থাকছে। শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং ‘লেকচার ডেমনস্ট্রেশন’-এর উপর সর্বোচ্চ ১০ নম্বর করে রাখা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারির হিসাবে যাঁদের বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর, তাঁরাই নিয়োগের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছে এসএসসি। রাজ্য সরকারের নিয়ম অনুসারে বয়সের ঊর্ধ্বসীমায় ছাড় পাবেন তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং অন্য অনগ্রসর শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীরা। এ ছাড়া, নতুন নিয়ম অনুসারে, মেধাতালিকা (প্যানেল) এবং অপেক্ষমাণ মেধাতালিকা (ওয়েটিং লিস্ট)-র মেয়াদ থাকবে প্রথম কাউন্সেলিংয়ের পর থেকে এক বছর পর্যন্ত। তবে রাজ্য সরকারের আগাম অনুমতি নিয়ে সেগুলির মেয়াদ আরও ছ’মাস বৃদ্ধি করতে পারবে কমিশন। নতুন পরীক্ষাবিধিতে আরও বলা হয়েছে, প্যানেলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও দু’বছর লিখিত পরীক্ষার মূল ওএমআর শিট সংরক্ষণ করতে হবে। তার পরে সেগুলি নষ্ট করা যেতে পারে। তবে ওএমআর শিটের স্ক্যান করা কপি সংরক্ষিত থাকবে ১০ বছর পর্যন্ত।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)