• বিএলএ নিয়োগে নিয়ম শিথিল করল নির্বাচন কমিশন, স্বাগত জানালেন শুভেন্দু, তৃণমূল বলছে: বিজেপি-কমিশনের গাঁটবন্ধন
    আনন্দবাজার | ১১ নভেম্বর ২০২৫
  • ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়া আট দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরে বুথ লেভেল এজেন্ট (বিএলএ) নিয়োগের নিয়ম শিথিল করল নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে নতুন নির্দেশিকা জারি হওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা এ হেন নিয়ম বদলকে বিজেপি ও কমিশনের ‘গাঁটবন্ধন’ বলে অভিহিত করছে বঙ্গের শাসকদল তৃণমূল।

    এত দিন পর্যন্ত বিএলএ নিয়োগে কমিশনের নিয়মে কড়াকড়ি ছিল। ২০২৩ সালের নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, যে কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে যদি কেউ বিএলএ হন, তাঁকে সেই বুথেরই ভোটার হতে হবে। কিন্তু এই নিময় বদল করে মঙ্গলবার কমিশন জানাল, বিএলএ হতে গেলে নির্দিষ্ট বুথের ভোটার না-হলেও চলবে। সংশ্লিষ্ট বিধানসভার ভোটার হলেই হবে।

    জাতীয় নির্বাচন কমিশন এই নির্দেশিকা পাঠিয়েছে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বচনী আধিকারিকের উদ্দেশে। নির্দেশিকাটি এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে শুভেন্দু লিখেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচন কমিশন বুথ লেভেল এজেন্ট নিয়োগে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সময়োপযোগী এই সিদ্ধান্তকে আমি স্বাগত জানাই।’ শুভেন্দু আরও লেখেন, ‘নির্বাচন কমিশনের বিএলএ নিয়োগের এই পরিধি বৃদ্ধিতে সকল রাজনৈতিক দল উপকৃত হবে।’

    তৃণমূল সূত্রে খবর, কমিশনের এ হেন নির্দেশিকায় ক্ষুব্ধ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত তৃণমূল এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে একান্ত আলোচনায় ক্ষোভের কথা গোপন করছেন না শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব। অভিষেক-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, তিনি এই বিষয়টিকে বিজেপি এবং কমিশনের ‘গাঁটবন্ধন’ হিসাবে অভিহিত করেছেন। তৃণমূল মনে করছে, বহু জায়গায় বিজেপি তাদের সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্য বিএলএ দিতে পারেনি। এমতবস্থায় কমিশন এই নির্দেশিকার মাধ্যমে বিজেপি-কে বিএলএ খুঁজে দিতে নেমেছে। তৃণমূলের আরও বক্তব্য, এর থেকে ফের একবার প্রমাণ হল কমিশন আসলে বিজেপির অধীনস্থ সংস্থা।

    ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে তৎকালীন বিজেপি নেতা মুকুল রায় কমিশনে তদ্বির করেছিলেন এই মর্মে যে, বিধানসভার ভোটার হলেই তাঁকে সেই কেন্দ্রে ভোটের দিন যে কোনও বুথে এজেন্ট করার অনুমতি দেওয়া হোক। শেষ পর্যন্ত তা-ই হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে ভোটের দিন ‘ওয়ান ডে’ ম্যাচে দেখা গিয়েছিল অচেনা পিচের ঘূর্ণি সামলাতে পারছেন না বিরোধী এজেন্টরা। তবে বিজেপি মনে করছে, এসআইআর প্রক্রিয়ায় এই শিথিলতা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। কারণ, ভোটের দিন লড়াইটা থাকে মনস্তাত্বিক এবং গায়ে-গতরের। এসআইআর প্রক্রিয়ায় তথ্য দেওয়ার লড়াই। বিজেপি সেটাকেই সুনিশ্চিত করতে চাইছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকদের একাংশ।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)