• শিবপ্রসাদ-নন্দিতার দ্বিতীয় ‘হামি’ জমল কি? এবার কোন বার্তা এল ছবির হাত ধরে?
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২৬ ডিসেম্বর ২০২২
  • ২৩ ডিসেম্বর ‘প্রজাপতি’ এবং ‘হত্যাপুরী’র সঙ্গে মুক্তি পেয়েছে শিবপ্রসাদ নন্দিতা জুটির নতুন ছবি ‘হামি ২’। মুখ্য ভূমিকায় আছেন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, গার্গী রায়চৌধুরী, অঞ্জন দত্ত, খরাজ মুখোপাধ্যায়, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সহ আরও অনেকেই। ‘হামি’-এর পর চার বছর কেটে গিয়েছে। আরও একবার নতুন গল্প, নতুন বার্তা নিয়ে এল লাল্টু এবং মিতালী। বড়দিনের জন্য ছোটদের কাছে এই ছবি একটা উপহার তো বটেই, বড়দের জন্য একটা শিক্ষা এই ছবি।

    বন্ধুত্ব থেকে চাইল্ড আর্টিস্ট, রিয়েলিটি শো থেকে বাবা মায়েদের মধ্যে রেষারেষি, সরকারি চাকরি পাওয়ার আকুলতা থেকে নিখাদ মজা সহ একাধিক বিষয় উঠে এসেছে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং নন্দিতা রায়ের নতুন ছবি হামি ২-তে। চিনু আর ভেপুর সম্পর্ক, তাদের বন্ধুত্ব, ভরসা, ভালোবাসায় মোড়া দুই ভাইয়ের সম্পর্ক সকলেরই মন ছুঁয়ে গিয়েছে। লাল্টু মিতালীর বড় সন্তান ভেপু। সে জিনিয়াস। রামায়ণ থেকে কোরআন, অঙ্ক থেকে সাধারণ জ্ঞান, ভূগোল থেকে বিজ্ঞান সবেতেই সে দারুন দক্ষ। মুখে মুখে কষে ফেলতে পারে অনেক বড় অঙ্ক। অন্যদিকে তার ভাই চিনু প্লেন ভালোবাসে, প্লেন নিয়ে দারুন জ্ঞান তার। দুই ছেলেকে নিয়ে ওদের জমাটি সংসার।

    এর মধ্যেই মিতালীর কাছে সুযোগ আসে ভাইরাল এবং ফেমাস হওয়ার। ভেপু সুযোগ পায় এক রিয়েলিটি শোতে। সেখানে গিয়ে কী হয় সেটাই দেখা যাবে এই ছবিতে।

    এই ছবিতে পরিচালক জুটি খুব সুন্দর করেই রিয়েলিটি শোয়ের অন্ধকার দিক তুলে ধরেছেন। শিশুদের মনে ঠিক কতটা আর কী প্রভাব পড়ে ভীষণ সুন্দর করে দেখানো হয়েছে। এক ভাইকে নিয়ে মা মেতে থাকলে, সে জিনিয়াস হলে আরেক ভাইয়ের মনে কী চলে, বন্ধুদের মনে কী হয় সেটাও দেখা যায় এখানে। শিশুদের সারল্য, তাদের কাছে বন্ধুত্বের মানে সত্যিই শিক্ষণীয়। রিয়েলিটি শোতে যে শিশুদের বদলে বাবা মায়েদের প্রতিযোগিতা চলে সেটা আরও একবার মনে করিয়ে দিল এই ছবি।

    লাল্টুর চরিত্রে থাকা শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় তাঁর কমিক সেন্স এবং সংলাপ দিয়ে আরও একবার মুগ্ধ করলেন। গার্গী রায়চৌধুরীও সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মায়েদের চোখে যে স্বপ্ন থাকে সন্তানদের নিয়ে, যে হিংসা প্রতিপালিত হয় সেটা খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন। ছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গিয়েছে অঞ্জন দত্তকে। নিতাই জেঠুর চরিত্রে তিনি বেশ মানানসই। কিন্তু তাঁর জায়গা যেন বড়ই কম মনে হল এই ছবিতে। তবে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কিন্তু আরও একবার এই ছবিতে ছক্কা হাঁকালেন। এছাড়া ছোট ছোট অংশে হরনাথ চক্রবর্তী, তনুশ্রী চক্রবর্তী, মনামী ঘোষ এবং সোমক ঘোষকে দেখা গিয়েছে।

    তবে যেটা ভালো লাগল না এই ছবির ক্ষেত্রে, সেটা হল রুকসানার টিচারের ভূমিকায় যিনি ছিলেন তাঁর সংলাপ বলার ধরন অতি নাটুকে লাগল। অন্যদিকে ভেপু তথা সিদ্ধার্থের সঙ্গে রুকসানার বন্ধুত্ব কী করে গভীর হল সেটা আরও একটু দেখানো যেতে পারত বলেই মনে হল। আগের বারের হামির গল্পের তুলনায় এই হামি ২-এর গল্প খানিক দুর্বল।

    তবে সেসব বাদ দিকে চিনু, ভেপু কিংবা রুকসানা, তিনজনই তাদের সাবলীল অভিনয়, সরলতা দিয়ে সকলের মন জয় করে নিয়েছে। গল্পের মাধ্যমে যে বার্তা দিতে চাওয়া হয়েছে সেটা খুব স্পষ্ট করে তুলে ধরা হয়েছে। সমাজের নানা জিনিস দেখানো হয়েছে এখানে। ফলে এই ছবি দর্শকদের যে একাধিক শিক্ষা দেবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

    রেটিং: ৩.৮/৫
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)