• মাঠে গা ঘেঁষাঘেঁষি করার চেষ্টা মেসির পছন্দ হচ্ছিল না, সিটের জেরায় বললেন যুবভারতীকাণ্ডে ধৃত মূল আয়োজক শতদ্রু দত্ত
    আনন্দবাজার | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কয়েক জন লিয়োনেল মেসির সঙ্গে প্রায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করার পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এই বিষয়টি পছন্দ করছিলেন না ফুটবল তারকা নিজেও। রাজ্য পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর কাছে এমনটাই দাবি করেছেন মেসির সফরের মূল আয়োজক শতদ্রু দত্ত।

    শুক্রবার রাতে সিটের সদস্যেরা কথা বলেন শতদ্রুর সঙ্গে। ধৃত মূল আয়োজককে যুবভারতীকাণ্ড নিয়ে বিবিধ প্রশ্ন করেন আধিকারিকেরা। কারা দায়িত্বে ছিলেন, কী ঘটেছিল, সে সব নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়ার পাশাপাশি মাঠের ভিতর প্রবেশের জন্য বিশেষ কার্ডের প্রসঙ্গও উঠে আসে জেরায়। বস্তুত, মাঠের ভিতরে প্রবেশাধিকারের কার্ডের সংখ্যা পরবর্তী সময়ে বাড়ানো হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিক ভাবে সিট জানতে পারে, ১৫০টি কার্ডের পরিকল্পনা ছিল। পরবর্তী সময়ে তা বৃদ্ধি করা হয়। সে ক্ষেত্রে মাঠের ভিতরে কারা প্রবেশ করতে পারবেন, তা কিসের ভিত্তিতে স্থির করা হয়েছিল— সেই সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় শতদ্রুর কাছে।

    সূত্রের খবর, ওই কার্ডের সংখ্যা পরবর্তী সময়ে কেন বৃদ্ধি করা হয়েছিল, কার নির্দেশে বৃদ্ধি করা হয়েছিল— তা জানতে চান তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে কতগুলি কার্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, পরে তা বৃদ্ধি করে কতগুলি করা হয়েছিল, সে বিষয়েও সিটের সদস্যেরা শতদ্রুর থেকে জানতে চেয়েছেন বলে সূত্রের দাবি।

    মেসিকে ভারত সফরে আনার জন্য কর-সহ প্রায় ১০০ কোটি খরচ হয়েছিল বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন শতদ্রু। বিভিন্ন স্পনসর, টিকিট বিক্রি এবং অন্য রাজ্যগুলিতে মেসির সফর থেকে এই টাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে দাবি শতদ্রুর। সূত্রের খবর, শতদ্রুর একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২২ কোটি টাকা রয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টটি ফ্রিজ় করতে চলেছেন তদন্তকারীরা।

    গত শনিবার মেসি যতক্ষণ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ছিলেন, একটি জটলা সর্বক্ষণ ঘিরে রেখেছিল তাঁকে। পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে ওই জটলার জন্য গ্যালারি থেকে দর্শকেরা মেসিকে ঠিক মতো দেখতেও পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। তা থেকেই তাণ্ডবের সূত্রপাত। ওই সূত্র এ-ও জানাচ্ছে, মাঠের মধ্যে লোকজনের প্রায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করার পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া মেসিও পছন্দ করছিলেন না। সিটের আধিকারিকদের এমনটাই জানিয়েছেন শতদ্রু। তদন্তকারীদের শতদ্রু আরও জানান, মেসি যখন বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি মাঠ থেকেই ঘোষণা করছিলেন যাতে ফুটবল তারকাকে ওই ভাবে ঘিরে ধরা না হয়।

    যুবভারতীকাণ্ডে অনুসন্ধান কমিটি গড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিটিতে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়। সেই কমিটি গত সোমবার রাতে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করে। সেই রিপোর্টে সিট গঠনের সুপারিশ করেছিল ওই অনুসন্ধান কমিটি। সেই সুপারিশ মেনে গত মঙ্গলবার চার সদস্যের সিট গঠন করে রাজ্য পুলিশ।

    চার সদস্যের এই সিট রয়েছেন রাজ্য পুলিশের এডিজি পীযূষ পাণ্ডে, ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মুরলীধর, এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম এবং এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। তাঁদের সাহায্য করার জন্য রয়েছেন অন্য আধিকারিকেরাও।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)