• ওপার বাংলার নাট্যকারে মন মজেছে মহিষাদলের, জমজমাট শীতের সন্ধ্যা
    এই সময় | ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
  • বছরে শেষে মহিষাদলে (Mahishadal) শুরু হয়েছে নাট্যমেলা। এবার নাট্যমেলার প্রধান আকর্ষণ বাংলাদেশের (Bangladesh) নাটক। মঞ্চস্থ করা হয় মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তৈরি নাটক। ওপার বাংলার নাট্যকাররা মন কাড়লেন এপার বাংলার মানুষের। বাংলাদেশের নাটকের প্রতি এপারের দর্শকদের মধ্যে আগ্রহও মুগ্ধ করেছে অভিনেতাদেরও। শীতের সন্ধ্যায় মহিষাদল থিয়েটার মঞ্চে (Theatre) বাংলাদেশের নাট্যচর্চা কেন্দ্রের নাটক ‘কি চাহ শঙ্খচিল’ নাটক পরিবেশিত হয়। দর্শকদের ভিড়ে মঞ্চ ছিল পরিপূর্ণ। নাট্যচর্চার মাধ্যমে আরো কাছাকাছি এল দুই বাংলা। প্রতি বছরের মতো এবারও মহিষাদল শিল্পকৃতির সহযোগিতায় আয়োজন করা হয়েছে নাট্য উৎসবের। এবার মূল আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশের নাটক। শুক্রবারের সন্ধেতে মঞ্চস্থ হয় বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে তৈরি নাটক ‘কি চাহ শঙ্খচিল’ নাটকটি। মুক্তিযুদ্ধে মানুষের পাওয়া, না পাওয়ার বেদনা, ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ধর্ষিত ও নির্যাতিত নারীদের কথাই তুলে ধরা হয়েছে ‘কি চাহ শঙ্খচিল’ এই নাটকে ।

    বিষয়বস্তু আবর্ত হয়েছে রোশনারা নামে এক নারীকে ঘিরে। তাঁর ছেলে ‘লালন’ শান্ত প্রকৃতির হলেও খুব জেদী । ছেলের বয়স ছয় বছর হয় এক সময়। মুক্তিযুদ্ধের সময় রোশনারাকে মিলিটারি ছাউনিতে বন্দি হয়ে থাকতে হয়েছিল। তাঁর উপর চলে অত্যাচার। সেই সময় রোশনারার স্বামী শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লালনকে। এরপর নাটকটি ঘটনার প্রবাহে দীর্ঘায়িত হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পর রোশনারা জীবন প্রবাহ। নাটকের সময় যত গড়িয়েছে, ততই মুগ্ধ করেছে ‘কি চাহ শঙ্খচিল’ দেখতে আসা দর্শকরদের। আর দর্শকদের এই আগ্রহ দেখে খুশি কুলাকুশলী থেকে শুরু করে পরিচালকও। নাটকটির পরিচালক খুরশিদ আলম জানিয়েছেন যে নাটকটির লেখক মমতাজউদ্দিন আহমদে। ১৯৭৭-৭৮ সালের সময় নাটকটি রচনা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এতদিন তা উপস্থান করা হয়নি।

    চলতি বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর। একই সঙ্গে বাংলাদেশ নাট্যচর্চারও ৫০ বছর উদযাপন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মমতাজউদ্দিনকে শ্রদ্ধা জানাতেই এই নাটকটি মঞ্চস্থ করা হল বলে জানান খুরশিদ আলম। এই নাটকটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অখণ্ড দলিল বলেও মনে করছেন তিনি। বর্তমানে ভারত কিংবা বাংলাদেশ, নাটকের মধ্যে লেগেছে রাজনীতির আঁচ। আর নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বাংলাদেশের অভিনেতা- অভিনেত্রীরা। নাটককে প্রতিবাদের ভাষা বলে মনে করছেন তাঁরা। মুক্তিযুদ্ধ এবং ভাষা আন্দোলনের সময় সাংস্কৃতিক কর্মীদের অবদানের কথা তুলে ধরেন। বর্তমানে অপসংস্কৃতির যে রমরমা হয়েছে, তারও প্রতিবাদ করেন। রাজনীতি ঢুকিয়ে প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর রোধ করা যাবে বলে মনে করছে বাংলাদেশি অভিনেতা-অভিনেত্রীরা।
  • Link to this news (এই সময়)