• চিকিৎসা মুদিখানার সামগ্রী না কি? ক্ষোভ উগরে দিয়ে প্রশ্ন চিকিৎসক নেতা মানস গুমটার
    হিন্দুস্তান টাইমস | ৩১ ডিসেম্বর ২০২২
  • রাজ্যের জেলা হাসপাতালগুলি থেকে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে রেফারের প্রবণতা কমাতে কড়া নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাতে ৩৭০ রকমের উপসর্গের ক্ষেত্রে জেলা হাসপাতালকেই চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হবে বলে স্পষ্ট জানানো হয়েছে। রাজ্য সরকারের এই নির্দেশিকার তীব্র বিরোধিতা করেছেন চিকিৎসকদের সংগঠন জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম ফর ডক্টর্সের নেতা মানস গুমটা। তাঁর প্রশ্ন, যারা এই তালিকা তৈরি করেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাঁদের বোধ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে।

    সরকারি নির্দেশিকা নিয়ে প্রতিবেদকের প্রশ্ন শুনেই ক্ষোভ উগরে দিয়ে চিকিৎসক গুমটা বলেন, ‘প্রথমেই বলি, চিকিৎসা কোনও মুদিখানার সামগ্রী নয় যে দোকানে গেলাম আর কিনে নিয়ে এলাম। এই সরকার চিকিৎসাকে মুদিখানার সামগ্রী ভাবছে। চিকিৎসা কখনো হাসপাতাল থেকে কিনে আনা সম্ভব নয়।’

    তাঁর প্রশ্ন, ‘এই নির্দেশিকা জারির আগে সরকার কি নিশ্চিত করেছে যে তালিকাভুক্ত সমস্ত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো, ওষুধ ও অন্যান্য সামগ্রী সমস্ত জেলা হাসপাতালে রয়েছে? সরকার কি নিশ্চিত করেছে এই পরিষেবাগুলি দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে হাসপাতালগুলিতে? তা না করে সরকার কী ভাবে চিকিৎসকদের এই নির্দেশ দিতে পারে?’

    চিকিৎসক গুমটার আশঙ্কা, ‘এই নির্দেশিকা জারি করে আসলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে চিকিৎসকদের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায় সরকার। পরিকাঠামোর ঘাটতি আড়াল করতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সাধারণ মানুষের সামনে ফেলে দিতে চায় তারা। এই নির্দেশিকার জেরে সাধারণ মানুষ মনে করবে, হাসপাতালে পরিকাঠামো আছে বলেই সরকার নির্দেশিকা জারি করেছে। কিন্তু আসলে তো পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। যার ফলে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সাধারণ মানুষের হাতে আক্রান্ত হতে পারেন। তার দায় কি নেবে সরকার?’

    একই সঙ্গে যারা এই নির্দেশিকা তৈরি করেছে চিকিৎসাবিজ্ঞানে তাদের বোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মানসবাবু। তিনি বলেন, ‘কারা এই নির্দেশিকা বানিয়েছেন জানি না। তালিকায় বিভিন্ন রকম হাড় ভাঙার চিকিৎসা জেলা হাসপাতালে করতে হবে বলে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু একটি ৮ বছরের শিশু ও একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধের হাড় ভাঙার চিকিৎসা কি এক? ৮ বছরের শিশুকে সহজেই কয়েকদিনে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানো সম্ভব। কিন্তু ৮০ বছরের বৃদ্ধের একাধিক আনুসাঙ্গিক উপসর্গ থাকে। সে সমস্ত উপসর্গের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কি জেলা হাসপাতালে আছেন? না থাকলে ৮০ বছরের বৃদ্ধের হাড় ভাঙার চিকিৎসা কী ভাবে করবেন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা? আর সেই রোগীকে রেফার করে কেনই বা সরকারকে জবাবদিহি করতে যাবেন তাঁরা?’

    মানসবাবু বলেন, ‘এতদিন সরকার জেলা হাসপাতালকে শুধু পরামর্শ দিচ্ছিল, এবার সরাসরি নির্দেশিকা জারি করেছে। যার ফলে জেলা হাসপাতালগুলিতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।’

     
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)