• পার্ক স্ট্রিট বনাম পার্ক স্ট্রিট, ভিড়ের লড়াইয়ে বড়দিনকে কি টেক্কা দিতে পারল বর্ষবরণের উদ্দাম রাত
    আনন্দবাজার | ০১ জানুয়ারি ২০২৩
  • প্রতিযোগিতা বলা উচিত, না কি ভিড়ের লড়াই! তবে এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগী এক জনই, আবার প্রতিপক্ষও এক। সহজ বাংলায় যাকে বলে, নিজের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় নামা। এই লড়াইয়ে প্রতিযোগী পার্ক স্ট্রিট, আবার প্রতিপক্ষও সেই পার্ক স্ট্রিট। তবে ফারাকটা দিন আর মানুষের ভিড়ের।

    গত দু’বছর কোভিডের কারণে সে ভাবে উৎসবমুখর হয়ে উঠতে দেখা যায়নি পার্ক স্ট্রিটকে। বড়দিন হোক বা বর্ষবরণের রাত, পার্ক স্ট্রিটের চেনা ছবিটা ধরা দেয়নি। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতেই উৎসবের দিনে পার্ক স্ট্রিটকে আবার স্বমহিমায় দেখা যাবে, চেনা ছন্দে ধরা দেবে, এটা বলাই বাহুল্য। হয়েছেও তাই। ২০২২-এর বড়দিনে তাই উপচে পড়েছিল ভিড়। বর্ষবরণের রাতেও সেই একই ছবি ধরা দিয়েছে। কিন্তু এই চেনা ছন্দে ফেরা পার্ক স্ট্রিটে বড়দিন জিতল না কি বর্ষবরণের রাত?

    বর্ষবরণের রাত মানেই জমজমাট পার্ক স্ট্রিট। আলোর বাহার। থিকথিকে মানুষের ভিড়। রকমারি পসরা নিয়ে ফেরিওয়ালা। চিৎকার, হুল্লোড়, কাতারে কাতারে মানুষের হেঁটে চলা, ধাক্কাধাক্কি, ঝামেলা— এ সব নিয়েই বর্ষবরণের রাত মেতে ওঠে পার্ক স্ট্রিটে। এ বারও তার অন্যথা হয়নি। ৩১ ডিসেম্বরের দুপুর থেকেই ভিড় জমতে শুরু করেছিল পার্ক স্ট্রিট এবং কাছাকাছি জায়গাগুলিতে। বিকেল গড়াতে সেই ভিড় আরও একটু গাঢ় হল। সন্ধ্যা নামতেই দেখা গেল গিজগিজ করছেন মানুষ। প্রতি বছর এই দিনটির চেনা ছবি বটে এটা। কিন্তু সেই চেনা ছবির মধ্যেও বছর বছর তো কিছু ফারাক হয়ই। তেমনটাই হয়েছিল ২০২৩-এর বর্ষবরণের রাতে।

    আর সেই ফারাক হল ভিড়ের। না, এ বারের ভিড়ে কিন্তু তেমন আসর জমাতে পারেনি বর্ষবরণের পার্ক স্ট্রিট। বরং, তাকে টেক্কা দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে বড়দিনের পার্ক স্ট্রিট। পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের বিকেল থেকেই ভিড় জমা শুরু হয়েছিল। সন্ধ্যার পর সেই ভিড় বেশ কিছুটা বাড়ে। গড়ে ৫-৮ হাজার লোক তখন পার্ক স্ট্রিটে ভিড় জমিয়েছিলেন। বর্ষবরণের কাউন্টডাউন শুরু হতেই ছবিটা বদলাতে শুরু করে। রাত ১২টা নাগাদ পার্ক স্ট্রিটে গড়ে ৮-১০ হাজার মানুষের জমায়েত ছিল। আর ওটাই ছিল সর্বোচ্চ। এমনটাই দাবি করছে পুলিশ।

    তবে ভিড় টানার ক্ষেত্রে বর্ষবরণের রাতকে অনেকটা পিছনে ফেলে দিয়েছে বড়দিনের পার্ক স্ট্রিট। পুলিশ সূত্রে খবর, বড়দিনে ভিড় ছিল অনেকটাই বেশি। একটা সময় সেই ভিড় ১৫ হাজার ছুঁইছুঁই অবস্থায় পৌঁছেছিল। সুতরাং ভিড়ের লড়াইয়ে বাজিমাত করল কিন্তু বড়দিনের পার্ক স্ট্রিট।

    তবে বর্ষবরণের রাতে গোটা শহর শব্দাসুরের গ্রাসে চলে গিয়েছিল। ফলে বর্ষবরণ না দীপাবলির রাত, তা বোঝা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা ছুঁতেই শুরু হয় নতুন বছরের উদ্‌যাপন। সঙ্গে শব্দবাজির তাণ্ডব। যা হার মানিয়েছে দীপাবলিকেও। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, শব্দবাজির হাত থেকে রেহাই পেল না শহরের কোনও অংশই। বাদ গেল না হাসপাতাল চত্বরও। সৌজন্য, বর্ষবরণের রাত।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)