সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: দার্জিলিং পুরসভা ইস্যুতে পাহাড়ের রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। পাহাড়ে গণতন্ত্র রক্ষার ডাক দিয়ে অজয় এডওয়ার্ডের নেতৃত্বে বিমল গুরুং, বিনয় তামাং একমঞ্চে অনীত থাপার বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়েছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ এই জোটকে সামনে রেখে পাহাড়ের রাজনীতিতে নতুন পালাবদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। কিন্তু, অনীতের দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বিমল ও বিনয়ের ফের একমঞ্চে আসার দিকটিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। একইরকমভাবে দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনে হামরো পার্টির উপস্থিত থাকার সিদ্ধান্তেও তারা চিন্তিত নয়।
সম্প্রতি দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান অপসারণের অনাস্থা ভোটে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টির কাউন্সিলাররা অনুপস্থিত ছিলেন। সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হামরো পার্টির চেয়ারম্যান অপসারণ করে অনীত থাপার দল নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন তথা দার্জিলিং পুরসভার বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে পৌঁছয়।
গত শুক্রবার অজয় এডওয়ার্ড ঘোষণা করেন দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচনের সভা তথা ভোটে তাঁর দলের কাউন্সিলাররা উপস্থিত থাকবেন।
তাতেই অনীত থাপার দল প্রশ্ন তুলেছে, চেয়ারম্যান অপসারণের প্রক্রিয়াকে অগণতান্ত্রিক বলে অনাস্থা ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন অজয়ের দলের কাউন্সিলাররা। নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচনও সেই প্রক্রিয়ার অঙ্গ। তাহলে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তাঁর দলের কাউন্সিলাররা আবার আসছেন কেন? ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমর লামা বলেন, হামরো পার্টি চেয়ারম্যান নির্বাচনে অংশ নিলেও আমরা চিন্তিত নই। কারণ ওরা দার্জিলিং পুরসভার নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করতে পারছে না। অগণতান্ত্রিক বলে ওরা চেয়ারম্যান অপসারণের অনাস্থা ভোটে অংশ নেননি। কাজেই চেয়ারম্যান নির্বাচনের ক্ষেত্রে ওরা যদি অংশগ্রহণ করে, তাহলে কিন্তু গত ২৮ ডিসেম্বর অনাস্থা ভোটকে মান্যতা দেওয়া হবে। তার থেকেও বড় কথা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ওদের হাতে কাউন্সিলার নেই।
এদিকে বিমল গুরুং ও বিনয় তামাংদের জোটবদ্ধ হওয়ার প্রসঙ্গে অমর লামা বলেন, একসময় কেউ পাহাড়ের মানুষকে বিপদের মুখে ফেলে রেখে আত্মগোপন করেছিলেন, কেউ দলবদল করে শাসকদলে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁরাই এখন জোট করে পাহাড়ের মানুষের উন্নয়নের কথা বলছেন। পাহাড়ের মানুষ জানে ওই জোট ওদের নিজেদের অস্তিত্বরক্ষা তথা স্বার্থসিদ্ধির জন্য। আর জিটিএ নির্বাচনে পাহাড়ের মানুষ অনীত থাপার নেতৃত্বে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার প্রতি আস্থা রেখেছে। কাজেই ব্যক্তিগত স্বার্থের ওই জোট পাহাড়ের মানুষকে প্রভাবিত করতে পারবে না।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সুপ্রিমো বিমল গুরুং সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটেই প্রমাণ হয়ে যাবে পাহাড়ের মানুষ কী চাইছে। দার্জিলিং পুরসভা নিয়ে আমরা আশাবাদী।