সংবাদদাতা, মালদহ: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে মালদহে এনে রোড শো ও বড় মাপের জনসভা করাতে তৎপর হয়ে উঠেছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা কংগ্রেসের ওই আবেদনে সম্মতি দিয়েছে দলের হাইকম্যান্ড। তবে কবে আসবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, তার দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি বলেই জেলা কংগ্রেস সূত্রের খবর।
পাশাপাশি কানাইয়া কুমার বা অন্য কোনও পরিচিত মুখকে নিয়ে এসে দলের পক্ষ থেকে জনসভা করে প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে বলে কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে। মালদহের মতো এক সময়ের দুর্গ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে মরিয়া হয়েই কংগ্রেস এখন বড় কর্মসূচি নিতে চাইছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে বড় মাপের নেতানেত্রীকে এনে চমক দেওয়া সম্ভব হলেও, ভোটে নতুন করে কংগ্রেসের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয় বলেই দাবি তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি’র।
মালদহ জেলা কংগ্রেসের অন্যতম নেতা ও প্রাক্তন বিধায়ক অর্জুন হালদার বলেন, আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে জেলায় ভারত জোড়ো কর্মসূচি পালন করব। তবে এই কর্মসূচিতে মূলত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বই অংশ নেবে। সঙ্গে থাকবে জেলার নেতারা। আমাদের মূল লক্ষ্য প্রিয়াঙ্কাকে মালদহে এনে রোড শো ও বড় জনসভা করানোর। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা মালদহ দক্ষিণের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালুবাবু) নিজে এনিয়ে কথা বলেছেন। কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রিয়াঙ্কাকে মালদহে পাঠানোর অনুরোধে ইতিমধ্যেই সম্মতিও দিয়েছে। তবে প্রিয়াঙ্কার সফরের দিনক্ষণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তিনি আরও বলেন, রক্তপাতহীন পঞ্চায়েত নির্বাচনের দাবি নিয়ে পৃথক জনসভা করার পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে। কানাইয়া কুমার অথবা ইমরান প্রতাপগারহিকে ওই সভায় আনার চেষ্টা চলছে। পরপর দু’টি বড় মাপের কর্মসূচি পঞ্চায়েত ভোটের আগে ঝিমিয়ে পড়া কংগ্রেসকে চাঙ্গা করতেই যে নেওয়া হচ্ছে, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। জেলা কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬ এবং ১৭ জানুয়ারি বৈষ্ণবনগর, সুজাপুর এবং ইংলিশবাজার বিধানসভা কেন্দ্রে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার সমর্থনে কর্মসূচি নিচ্ছে কংগ্রেস। প্রদেশ নেতৃত্ব ওই পদযাত্রায় অংশ নেবে। পাশাপাশি অন্যান্য বিধানসভা কেন্দ্রগুলিতে প্রাক্তন বিধায়করা নিজেদের উদ্যোগে একই ধরনের জনসংযোগ কর্মসূচি করবেন।
তবে কংগ্রেসের এই কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল ও বিজেপি। তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, এই জেলায় কংগ্রেস এখন ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। মালদহের মানুষ বুঝে গিয়েছেন উন্নয়নের ব্যাটন এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়েও তিনিই একমাত্র নির্ভরযোগ্য মুখ। ফলে নেতানেত্রীদের এনে দলের জমি উদ্ধার কংগ্রেসের পক্ষে আর নতুন করে সম্ভব নয়। বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু’র বক্তব্য, সারা দেশের সঙ্গে মালদহেও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে কংগ্রেস। একটি পরিবারের নির্দেশে ওঠবোস করা কংগ্রেসের প্রতি দেশের মানুষই অনাস্থা জানিয়েছেন। ফলে মালদহে হারানো জমি ফিরে পাওয়ার এই চেষ্টা আসলে কংগ্রেস নেতৃত্বের হাস্যকর একটি উদ্যোগ।