• অবৈধ সম্পর্কের প্রতিবাদ, স্ত্রীকে পুড়িয়ে খুন, চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ০৩ জানুয়ারি ২০২৩
  • সংবাদদাতা, পতিরাম: অবৈধ সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগ উঠল। অভিযুক্ত স্বামীর নাম নয়ন্ত বর্মন। এনিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতে। পুলিস জানিয়েছে, মৃত বধূর নাম পলি বর্মন (২৬)। অভিযোগ, রবিবার বিকেলে স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে অশান্তি শুরু হয়। প্রতিবাদ করায় পলিদেবীকে মারধর করে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রেফার করা হলে রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী ও পরিবারের লোকজন পলাতক। মৃতার বাপেরবাড়ির লোকজন সোমবার তপন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিস ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। 

    মৃত বধূর আত্মীয়া সুচিত্রা বর্মন বলেন, জামাইয়ের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। এনিয়ে দীর্ঘদিন ওদের পরিবারে অশান্তি চলছিল। রবিবার হঠাৎ জানতে পারি, আমাদের মেয়ে হাসপাতালে। মাঝেমধ্যে জামাই আমাদের মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। জামাই ও বাড়ির সদস্যরা মিলেই মেয়েকে পুড়িয়ে খুন করেছে। মৃতার এক আত্মীয় আদিত্য সরকার বলেন, অভিযুক্তরা গতকাল মারধর করে। এরপর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। তপন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। অভিযুক্তদের শাস্তি চাই। তপন থানার আইসি গৌতম রায় বলেন, ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

    পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বধূর বাড়ি বালুরঘাটের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চকঘটক গ্রামে। তাঁর স্বামী নয়ন্ত বর্মনের বাড়ি তপনের চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের খিরট্টা গ্রামে। ২০১৬ সালে দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হয়। দম্পতির পাঁচ বছরের ছেলে ও সাতমাসের কন্যা রয়েছে। বধূর বাপেরবাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকেরা পলিদেবীর উপর মানসিক অত্যাচার করত। অভিযুক্ত স্বামী ভিন জেলায় ধান কাটার কাজ করে। ফলে ধান ওঠার মরশুমে সে বাইরেই থাকে। সেই সুবাদেই বর্ধমানের এক মহিলার সঙ্গে নয়ন্তের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানতে পেরে ওই বধূ প্রতিবাদ করেন। শুরু হয় অশান্তি। বাড়ি থেকে বধূকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। 

    এনিয়ে একাধিকবার দুই পরিবারের তরফে মীমাংসার চেষ্টা হলেও কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। অশান্তির জেরে পলিদেবী দীর্ঘদিন বালুরঘাটে বাপের বাড়িতে ছিলেন। শ্বশুরবাড়ি ফিরতেই ফের অশান্তি শুরু হয়। অভিযোগ, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় মারধর করে তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি বধূর বাপেরবাড়িতেও জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। প্রথমে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতাল ও পরে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রেফারের পরে রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। রবিবার বিকেলে ওই ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক। সোমবার বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে মৃতদেহটি বধূর আত্মীয়দের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মৃত বধূর বাবা রাজকুমার বর্মন জামাই সহ শ্বশুর, শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)