• টাকা ঢোকার পরেও বাদ যেতে পারে নাম
    আনন্দবাজার | ০৩ জানুয়ারি ২০২৩
  • এ সপ্তাহ থেকেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার দ্বিতীয় পর্যায়, ‘আবাস প্লাসের’ উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির টাকা ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম কিস্তির টাকা ঢোকার ৯০ দিনের মধ্যে বাড়ি শেষ করার উপরে জোর দিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। প্রতিটি ব্লক প্রশাসনকে পর্যাপ্ত নির্মাণ সামগ্রী মজুত রাখা, নিয়মিত নজরদারির বার্তা দেওয়া হয়েছে।

    এ ছাড়াও প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পরেও যে কোনও উপভোক্তাকে অনুপযুক্ত ঘোষণা করে অনুমোদন বাতিল করা হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে প্রথম কিস্তির টাকা প্রশাসনকে ফেরত দিতে হবে উপভোক্তাকে। টাকা না ফেরালে আইনের পথে হাঁটারও বার্তা ব্লকে ব্লকে দেওয়া হয়েছে।

    জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, ‘‘বাড়ি তৈরির অনুমোদন শনিবার রাতেই দেওয়া হয়ে গিয়েছে। সোমবার থেকে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। আশা করা হচ্ছে, বুধ-বৃহস্পতিবার থেকে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে।’’

    পূর্ব বর্ধমানে বাড়ি তৈরির অনুমোদন এসেছিল ৫৬,৭৫৪ জনের। অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৫২,৭৩০ জনের (৯৩ শতাংশ)। জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) প্রিয়াঙ্কা সিংলা বলেন, ‘‘যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও জমিহীন, অন্যত্র থাকার মতো কিছু বিষয়ের জন্য বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া যায়নি। বাকি উপভোক্তারা প্রথম কিস্তি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে যাতে বাড়ি শেষ করতে পারেন, তার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’ রাজ্য গ্রামোন্নয়ন দফতরের দাবি, কেন্দ্র ১০০ দিনের মধ্যে প্রথম দফার বাড়ি তৈরি করতে বলেছে। কিন্তু বিভিন্ন জেলা ৯০ দিনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। প্রথম দফার বাড়ি তৈরি হয়ে গেলে বাকি উপযুক্ত উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্থিক অনুদান দাবি করতে পারবে রাজ্য।

    সম্প্রতি বিডিওদের নিয়ে বৈঠকে জেলাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা এলাকার ইটভাটা মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে প্রশাসনের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছেন। নির্মাণ সামগ্রী মজুত রাখা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির কাজ কত দূর এগিয়েছে, তার দৈনিক রিপোর্ট দিতেও বলা হয়েছে। বিডিওদের বার্তা দেওয়া হয়েছে, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ, এই তিন মাসের প্রতি ১০ থেকে ১৫ তারিখ আবাস সপ্তাহ পালন করতে হবে।

    জেলা প্রশাসনের ঠিক করেছে, পঞ্চায়েত স্তরে সপ্তাহে এক দিন, ব্লক ও মহকুমা স্তরে এক দিন ও মাসে এক দিন জেলা স্তরে বৈঠক করে বাড়ি তৈরির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। জেলা পরিষদের উপসচিব তথা আবাস প্রকল্পের নোডাল অফিসার মৃণ্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘বাড়ি তৈরিতে পিছিয়ে পড়া ব্লকগুলিতে বিশেষ বৈঠক করবেন জেলাশাসক।’’ প্রতিটি কিস্তি পাওয়ার পরে জিও ট্যাগিং করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এত সমীক্ষা, পরীক্ষার পরেও কেন উপভোক্তাদের তালিকায় অনুপযুক্ত থাকতে পারে বলে ভাবছেন প্রশাসনের কর্তারা?

    জেলার আধিকারিকদের দাবি, দু’লক্ষ ২৬ হাজার ৮৯০ জনের তালিকা থেকে অনুপযুক্তদের বাদ দিয়ে এক লক্ষ ৭৬ হাজার ৪৫১ জনের নাম বাছা হয়েছে। সেখান থেকে কেন্দ্রের বিশেষ সফ্টওয়ারের সাহায্যে পঞ্চায়েত ধরে অগ্রাধিকার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রশাসনের কর্তার দাবি, ‘‘একাধিক স্তরে যাচাই হয়েছে। ভুলের সম্ভাবনা খুবই কম। তাও কোথাও ভুল থাকলে দ্রুত যাতে সংশোধন করা যায়, তা দেখতে বলা হয়েছে।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)