• বাদ্যযন্ত্র থেকে ওষুধ সবেতেই লাগে কাজে, অদ্ভুতদর্শন বিদেশি ফল নিয়ে শোরগোল আমডাঙায়
    এই সময় | ০৩ জানুয়ারি ২০২৩
  • West Bengal Local News সকলের অলক্ষ্যে বেড়ে উঠেছে গাছটি। পথ চলতি মানুষ একবার হলেও থমকে গিয়ে ভাবে আসলে এটি কিসের গাছ? ফলগুলি বেলের মতো দেখতে হলেও বেল নয়। বরং একে রাক্ষুসে বেল বলা গেলে ভুল হবে না। অচেনা, অপরিচিত গাছের ডালে ফলে রয়েছে ১০ থেকে ১২ কেজি ওজনের বেলের মতো গোল গোল ফল। এই গাছটিকে ঘিরে সম্প্রতি শুরু হয়েছে শোরগোল। উত্তর ২৪ পরগনা আমডাঙ্গা ব্লকে বহিছগাছি এলাকায় এমন গাছ একটিই আছে। বঙ্গের কোথাও এমন দ্বিতীয় গাছের খোঁজ এখনও নজরে আসেনি বলে দাবি গাছ মালিকের।

    কোথা থেকে এল এই গাছ?

    এমন বিশালাকৃতি ফলের কারণেই এলাকায় এই গাছকে কেউ ডাকে তানপুরা ফলের গাছ বলে, আবার কেউ ডুগডুগি ফল বলে, কেউ আবার বলে মহাবেল, দশবেল। এমন ফলের গাছ এল কোথা থেকে? গাছটি যার সেই বাড়ির মালিক গিয়াসুদ্দিন জানান, গাছটির বয়স ১০০ বছরেরও বেশি। এই গাছের ফলের নাম Calabash, যার বৈজ্ঞানিক নাম Crescentia Cujete। আফ্রিকার দক্ষিণ অংশে দেখা যায় এই ধরনের গাছের। গিয়াসউদ্দিন সাহেব জানান, তিনি বাংলাদেশ সহ দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন কিন্তু এমন গাছ বা ফল কোনদিন নজরে আসেনি তার। কিন্তু আমডাঙায় কী ভাবে এল এই গাছ? সে উত্তর নিজেই দিলেন গাছের মালিক। তিনি জানান, তাঁর বাবা কোথাও থেকে এই গাছ পেয়ে নিজেদের বাড়িতে লাগিয়ে দেন। তবে থেকেই আমডাঙায় রয়েছে এই গাছ।

    কী বিশেষত্ব এই গাছের?

    এই গাছের অদ্ভুত দর্শন ফলই এর বিশেষত্ব। একটা ফলের সর্বোচ্চ ওজন ১০-১২ কেজি হয়,যা এক হাতে ধরে রাখা সহজ নয়। বেলের মত দেখতে এবং একটা বেলের দশগুণ বড় তাই এই ফল গ্রামের সবাই দশবেল বলেই জানে।ফল পেকে গেলে তার খোল এতটায় শক্ত হয়ে যায় যা সহজে ভাঙা যায় না।

    এই ফল কী কাজে লাগে?

    কেউ কেউ বলে এই ফল বিষাক্ত কিন্তু, গাছ মালিকের দাবি, গোরু-ছাগলকে খাইয়ে দেখা গিয়েছে কোনও প্রভাব পড়েনি। এমনকী গিয়াসুদ্দিন দাবি করেছেন এই ফল তিনিও খেয়ে দেখেছেন তাতে কোনও সমস্যা হয়নি। এর স্বাদ অনেকটা আপেলের মতো। মিষ্টি মিষ্টি এবং বালি বালি। এর নাকি ঔষধি ও ভেষজও গুণও আছে। বিদেশে এই ফলের খোল দিয়ে বাদ্য যন্ত্রও তৈরি হয়। এই ফল পাকলে তার খোল এতটায় শক্ত হয়ে যায় যা সহজে ভাঙা যায় না।

    এই গাছের কারণেই দূরদুরান্তে বহিছগাছির নাম ছড়িয়ে পড়েছে। ফল গুলি গাছের কান্ডে হয়। প্রথমে কুঁড়ি আসে। তারপর সেখান থেকে ধুতরা ফুলের মতো ফুল হয়। সেখান থেকে ফল। গরমের সময় এই ফল বেশি হয়। তবে সারাবছরই ফল থাকে গাছে। সেন্ট লুইসা দেশের জাতীয় গাছ হলেঈ আমেরিকার উষ্ণ অঞ্চলের এটি একটি স্বাভাবিক গাছ। আমাদের দেশে তেমনভাবে দেখা যায় না বলে গাছটি বা ফলটিকে যে যেমন পেরেছে নাম রেখে দিয়েছে। গিয়াসুদ্দিন চান, গাছটিকে নিয়ে গবেষণা হোক। পরিচিতি পাক এই ফল।
  • Link to this news (এই সময়)