রাত পোহালেই সরস্বতী পুজো। স্কুলের একটি ক্লাসঘরে তৈরি করা হচ্ছে মণ্ডপ। সেই ঘর ও বাইরে ছাত্রছাত্রীদের ভিড়। ক্লাসের বারান্দায় বসে ছোট ছোট কাগজ কেটে মণ্ডপ সাজানোর উপকরণ তৈরি করছে লাবু, রিমি ও সুলতানাদের পাশাপাশি, রুবিনা ইয়াসমিন, জবা বর্মণ, শর্মিলা খাতুনরা। লাবুর কথায়, ‘‘আমরা কাগজ কেটে নানা জিনিস তৈরি করছি। সেনা বাহিনীর কাজ থেকে শুরু করে দেশের পতাকা, মানচিত্র তৈরি করেছি।’’
পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল একাদশ শ্রেণির শরিফা আনসারি, পূজা দে, রোশনি আমিনরা। ওরা রয়েছে পুজোর ফল কাটার দায়িত্বে। বুধবার সকাল থেকেই ওই কাজ কার্যত শুরু হয়ে যাবে। আবার ওরা সবাই অঞ্জলিও দেবে। জিজ্ঞাসা করতেই সমস্বরে বলে ওঠে, ‘‘না খেয়ে আমরা সবাই অঞ্জলি দেব।’’
স্কুলের পুজো নিয়ে গর্বিত প্রধান শিক্ষক খালেকুজ্জামান থেকে সহকারী শিক্ষিকা কৃষ্ণা দাস জোয়ারদার। প্রধানশিক্ষক বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের পুজোর বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছি। যা আমাদের গর্বিত করে।’’ কৃষ্ণা বলেন, ‘‘প্রতিমা নিয়ে আসা, প্রসাদের জন্য ফল কাটা, উপকরণ সাজানো— সব কাজ ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। এখানে কারও চোখে কেউ আলাদা নয়।’’ স্কুলের শিক্ষক নীহাররঞ্জন দাস বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়া সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। সকলে মিলে আমরা সরস্বতী পুজোয় মেতে উঠি। এটা একটা উৎসব হয়ে উঠেছে।’’
একই চিত্র কোচবিহার ২ ব্লকের পাতলাখাওয়া হাইস্কুলে। সেখানে কাগজের ফুল, মালার সাজসজ্জায় হাত লাগিয়েছে মামনি ইয়াসমিন, পিঙ্কি দে, জয়িতা সরকারের মতো পড়ুয়ারা। প্রধান শিক্ষক প্রবীর মিত্র বলেন, “সরস্বতী পুজোর প্রস্তুতিতেই সকলে এক সঙ্গে কাজ করছে। যা সম্প্রীতিরও নিদর্শন।” একাদশ শ্রেণির মামনির কথায়, “পুজোর প্রস্তুতিতে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কাজের আনন্দটাই আলাদা।” পাশে দাঁড়িয়ে বন্ধু পিঙ্কি বলে, “ওদের বাড়ি ইদের নিমন্ত্রণে যাই। আবার পুজোর কাজেও সকলে এক সঙ্গে থাকি।’’