• তৃণমূলের ভোটে থাবা বসাতে ভিন রাজ্যের সংখ্যালঘু নেতাদের বঙ্গে পাঠাচ্ছে বিজেপি
    বর্তমান | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • রাজু চক্রবর্তী, কলকাতা: লক্ষ্য লোকসভা ভোট। তাই এবার তৃণমূলের ‘কোর ভোট ব্যাঙ্ক’-এ হানা দেওয়ার ছক কষছে বিজেপি। নিশানায় মূলত রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত লোকসভা কেন্দ্রগুলি। সেখানে গেরুয়াকরণের মরিয়া চেষ্টা শুরু হচ্ছে শীঘ্রই। মূল উদ্দেশ্য, তৃণমূলের প্রাপ্ত সংখ্যালঘু ভোটের হার কমিয়ে চূড়ান্ত ফলাফল বদলে দেওয়া। গত ১ এবং ২ ফেব্রুয়ারি ছত্তিশগড়ের রায়পুরে সর্বভারতীয় বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে। শুধু বাংলা নয়, গোটা দেশে ৫০ শতাংশের বেশি সংখ্যালঘু ভোটার থাকা ৭০টি আসনের জন্যই এই নয়া রণকৌশল। তবে গোটা বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের ১১টি লোকসভা কেন্দ্রকে টার্গেট হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেগুলি হল— ডায়মন্ডহারবার, বসিরহাট, মথুরাপুর, জঙ্গিপুর, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, রায়গঞ্জ, কৃষ্ণনগর, বহরমপুর, মালদহ উত্তর এবং মালদহ দক্ষিণ। যদিও সংশ্লিষ্ট আসনগুলিতে জয় কার্যত অসম্ভব, মানছেন বিজেপি নেতারাই। তবু কেন্দ্রীয় শাসকদল ‘নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রা ভঙ্গ’ নিশ্চিত করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না। বিজেপির ইতিহাসে এই প্রথম 

    বাংলা সহ একাধিক রাজ্যের ওই আসনগুলিতে পাঠানো হচ্ছে ভিন রাজ্যের সংখ্যালঘু নেতাদের। আগামী মার্চ মাস থেকে তারা সেখানে বিজেপির হয়ে প্রচার শুরু করবেন।

    সূত্রের খবর, এরাজ্যে চিহ্নিত ১১টি লোকসভা কেন্দ্রের সিংহভাগই তৃণমূলের দখলে। প্রতিটি আসনের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভায় অন্তত ৮০০টি করে সংখ্যালঘু বাড়িতে যাবেন ভিন রাজ্যের ওই পদ্ম প্রতিনিধিরা। সেখানে খাওয়া-দাওয়া সারবেন। গৃহকর্তা সহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলবেন। তাঁদের সামনে তুলে ধরবেন মোদি সরকারের ‘ফিল গুড’ ছবিটা। তিন তালাক, সংখ্যালঘু স্কলারশিপ, আবাস যোজনা সহ একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুফল প্রচার করা হবে। এ প্রসঙ্গে দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে সংখ্যালগুরুদের তুলনায় সংখ্যালঘুদের কাছে পৌঁছলে ভোটবাক্সে বাড়তি ডিভিডেন্ড মেলে। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত সহ কয়েকটি রাজ্যে সেই নজির রয়েছে। এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য সভাপতি চার্লস নন্দী বলেন, ‘জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে বাংলাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্যের পিছিয়ে পড়া এই অংশের মানুষের সার্বিক উন্নয়নে রোড ম্যাপ তৈরি করেছেন। আমরা সেই মতো কাজ করব। তবে কেবল বাংলাই নয়, মোদি-শাহের চোখ রয়েছে দেশের ৭০টি সংখ্যালঘু লোকসভা কেন্দ্রে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি হল— উত্তরপ্রদেশ, জম্মু-কাশ্মির, কেরল, তেলেঙ্গানা, বিহার, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, অসম, মহারাষ্ট্র প্রভৃতি।’   
  • Link to this news (বর্তমান)