• আয়কর ছাড়ের ঘাটতি মেটাতে জিএসটি বৃদ্ধি? ১৮ই বৈঠক  দাম বাড়তে পারে বহু পণ্যের
    বর্তমান | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: আয়করে শর্তসাপেক্ষ ছাড় দেওয়া হয়েছে বাজেটে। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যবিত্ত দরদী হিসেবে প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপি এবং মোদি সরকার। বাজেটেই বলা হয়েছে, আয়করে এই ছাড়ের জেরে কেন্দ্রের লোকসানের অঙ্ক গিয়ে দাঁড়াবে বছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু কীভাবে পূরণ করা হবে সেই ক্ষতি? তাই বাজেট পেশের পর থেকে রাজকোষে অতিরিক্ত আয়ের সংস্থানে শুরু হয়েছে ভাবনাচিন্তা। আর তা করতে গিয়ে সহজ রাস্তাই বেছে নেওয়া হচ্ছে বলে খবর। সেই পন্থার নাম—জিএসটি বৃদ্ধি। অর্থাৎ যে জনগণকে আয়কর ছাড় দেওয়া হল, তাদের থেকেই আবার ঘুরপথে অতিরিক্ত টাকা আদায় করার প্রস্তুতি চলছে।

    আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি বসবে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক। সেখানে জিএসটি সংগ্রহের পরিধি বাড়ানো নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ এখনও পর্যন্ত যেসব পণ্য এই করের আওতায় নেই, সেগুলির একটি বড় অংশকে আনা হবে এর অধীনে। সেইসঙ্গে বেশ কিছু পণ্যের জিএসটি হার বৃদ্ধি করার কথাও ভাবা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই তালিকায় বাছাই করা হতে পারে পানমশলা, গুটখা, ইলেকট্রনিক্স এবং অনলাইন গেমকে। এছাড়া ক্যাসিনো ও ঘোড়দৌড় বা হর্স রেসিংয়ের উপর নতুন করে জিএসটি আরোপ করা হবে। পাশাপাশি করকাঠামোর তুলনামূলকভাবে অনেক কম ধাপে থাকা কিছু নিত্যব্যবহার্য পণ্যকে চিহ্নিত করে সেগুলির জিএসটি হার বাড়ানো হতে পারে।

    শুক্রবার দলের এমপিদের নিয়ে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তাঁদের বুঝিয়েছেন যে, কেন এই বাজেট জনস্বার্থবাহী এবং সাধারণ মানুষের জন্য আয়কর ছাড় কতটা সুদূরপ্রসারী হতে পারে। সংসদের অধিবেশন শেষে নিজেদের কেন্দ্রে গিয়ে সিদ্ধান্তগুলির সপক্ষে প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এমপিদের। কিন্তু এই উচ্চকিত প্রচারের আড়ালেই নিঃশব্দে শুরু হয়েছে বাড়তি আয়ের সংস্থানের প্রস্তুতি। অর্থাৎ এক হাতে দিয়ে অন্য হাতে নিয়ে নেওয়ার কৌশল।

    ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে জিএসটি আদায় হয়েছিল ১ লক্ষ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু তারপর থেকে ক্রমেই নিম্নমুখী অর্থনীতি। তার জেরে কমে যায় জিএসটি সংগ্রহ। শেষপর্যন্ত গত মাসে তা কোনওমতে দেড় লক্ষ কোটি টাকার গণ্ডি পেরিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের রাজকোষ ভরাতে সেই অঙ্কটা ২ লক্ষ কোটি পার করানোই লক্ষ্য অর্থমন্ত্রকের। কারণ, বিগত কয়েক বছরের প্রবণতায় একটি বিষয় স্পষ্ট—কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ের সবথেকে বড় মাধ্যম এখন মানুষের থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর আদায়। রেকর্ড আয়কর আদায় হয়েছে গত বছর। আবার লাগাতার রেপো রেট বাড়িয়ে ব্যাঙ্কগুলির আয়ের পথও এখন অনেক প্রশস্ত। তৃতীয় ত্রৈমাসিকে স্টেট ব্যাঙ্ক সর্বকালীন রেকর্ড মুনাফা করেছে। এবং তা প্রধানত সুদের টাকা আদায় করে। আর এবার বাড়ছে জিএসটির পরিধি। 
  • Link to this news (বর্তমান)