• দক্ষিণ দিনাজপুরে রেশনের চাল মিলে ছেঁটে পালিশ করে নামকরা ব্র্যান্ডের প্যাকেটে বিক্রির অভিযোগ
    বর্তমান | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • সংবাদদাতা, বালুরঘাট: রেশনে বণ্টন করা মোটা চাল অবাধে জেলা জুড়ে খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আর সেই মোটা চাল রাইসমিলে ছেঁটে পালিশ করার পর প্যাকেট বন্দি করে দামী চাল হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বাজারে। ক্রেতারা অজান্তে রেশনের চাল বিক্রি করে ফের সেই চালই মোটা টাকা দিয়ে কিনে খাচ্ছেন। জেলা জুড়ে এমন চক্র সক্রিয় হওয়ায় ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছেন।  

    কীভাবে চলে চালের এই বেআইনি কারবার? সূত্রের খবর, রাইস মিলে অত্যাধুনিক মেশিনে রেশনের মোটা চাল ছেঁটে উপরি ভাগ ফেলে দেওয়া হয়। তারপর তা পালিশ করতে ফিটকিরি, সার ও নানারকম রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে রেশনের চাল চিকন ও চকচকে দেখতে হওয়ার পাশাপাশি খেতেও সুস্বাদু লাগছে। কিন্তু নানা রাসায়নিক মেশানোর কারণে চালের গুণগত মান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি এই চাল খেয়ে শরীরের ক্ষতিও হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। প্রশাসন এনিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করায় রেশন চাল খোলা বাজারে ব্যাপক হারে বিক্রির চক্র সক্রিয় হয়েছে।

    সূত্রের খবর, অটোমেটিক মেশিনের মাধ্যমে প্রথমে রেশনের চাল বাছাই ও পালিশ করা হয়। চাল মেশিনে দিলে কালো, লাল, ভাঙা আলাদা হয়ে যায়। পরে সেই চাল মেশিনে দিয়ে উপরের আবরণ ছাঁটাই করে ছোট করা হয়। চকচকে ও গন্ধ যুক্ত করতে নানা প্রকারের রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই স্বচ্ছ চাল প্যাকেট করে বাজারে নানা কোম্পানির নামে বিক্রি করা হচ্ছে। ২৫ টাকা কেজি দরে রেশনের মোটা চাল কিনে মেশিনে চিকন করে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। খাদ্যদপ্তরের সঙ্গে রাইস মিল মালিকদের যোগসাজশ থাকার কারণে খোলাবাজারে রেশনের চাল বিক্রি হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

    জেলা খাদ্য নিয়ামক ফুরবা ভুটিয়া অবশ্য বলেন, রেশনের চাল খোলা বাজারে বিক্রি করা যেমন অপরাধ, তেমনই ক্রয় করাও আইনত অপরাধ। আমরা এনিয়ে শীঘ্রই অভিযান চালাব। এম আর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক ভূপেশ ঘোষের কথায়, রেশনের চাল আমরা সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করছি। তবে বণ্টনের পরে গ্রাহকরা সেই চাল বিক্রি করে দিচ্ছেন। দুয়ারে রেশন শিবিরের আশপাশ থেকে ফড়েরা চাল কিনছে। আমরা খাদ্যদপ্তরকে জানিয়েছিলাম, কোথায় চাল বিক্রি হচ্ছে। পুরো তালিকা দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। যেকারণে রেশনের চাল অবাধে বিক্রি হচ্ছে। সেই চাল আবার মেশিনে ছাটাই করে নামী দামি কোম্পানির নামে বিক্রি হচ্ছে।

    দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাজুড়ে  গ্রাহকরা  রেশনে পাওয়া সামগ্রী তুলে তা খোলা বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করছেন। অধিকাংশ গ্রাহক  রেশনের  চাল, আটা, গম, কেরোসিন খোলাবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। আগের থেকে বেশি পরিমাণ  রেশনের সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। অধিক সামগ্রী বিনামূল্যে পেয়ে তা বিক্রি করে গ্রাহকরা হাতে ভালো টাকা পাচ্ছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)