কুনকিকে ঘিরে তাণ্ডব, মাহুত পড়ে যেতেই পিষে দিল বুনো হাতির দল
এই সময় | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
এই সময়, আলিপুরদুয়ার: বেনজির ঘটনা জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে। রবিবার সন্ধ্যায় কুনকি হাতি পৃথ্বীরাজকে নিয়ে জঙ্গল সুরক্ষার কাজে বেরিয়েছিলেন মাহুত রাজীব ওঁরাও (৩০) ওরফে জীবন। জলদাপাড়া পূর্ব রেঞ্জের ব্যাঙডাকি বিটের মালঙ্গি তিন নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলের গভীরে পৃথ্বীরাজকে ঘিরে ধরে একদল বুনো হাতি। কুনকি হাতিটিকে বাগে পেয়ে তার উপর ঘন ঘন আক্রমণ চালাতে শুরু করে বুনো হাতির দল। সামনের দুই পায়ে লোহার বেড়ি থাকায় অসহায়ের মতো মার খেতে বাধ্য হয় পৃথ্বীরাজ। একসময় দেহের ভারসাম্য হারিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়েন মাহুত রাজীব ওঁরাও। সঙ্গে সঙ্গেই মাহুতকে পিষে মারে বুনো হাতির পাল।
অসহায় মাহুতকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় পৃথ্বীরাজ। বুনো হাতির দল চলে যাওয়ার পর চোখে জল নিয়ে করুণ আর্তনাদ করতে করতে ব্যাঙডাকির হস্তিশালায় ফিরে আসে পৃথ্বীরাজ। তাকে দেখেই সন্দেহ দানা বাঁধে কর্তব্যরত মনে। সঙ্গে সঙ্গেই অন্য তিনটি কুনকি হাতিকে নিয়ে মাহুত রাজীব ওঁরাওয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন একদল বনকর্মী। শেষে উদ্ধার হয় মাহুতের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ।
ইতিপূর্বে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে বেশ কিছু কুনকি হাতিরা মেরে ফেললেও রাজীব ওঁরাওয়ের পরিণতি একেবারেই নজিরবিহীন বলে দাবি করেছেন বনকর্তারা। দুর্ঘটনার পর বনের গভীরে কর্তব্যরত মাহুত ও বনকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। ঠিক কীভাবে কর্তব্যরত মাহুত ও বনরক্ষীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত কর যায়, তা নিয়ে নতুন করে ভাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনদপ্তর। জলদাপাড়া বনবিভাগের ডিএফও দীপক এম বলেন, 'খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা এবং সঙ্গে নজিরবিহীনও বটে। সরকারি নিয়ম মেনে মৃত মাহুতের পরিবারের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে।'