• দফতর সরতে না দেওয়ায় বন্ধ জলাধার, সঙ্কটে জগাছার বাসিন্দারা ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৮
    আনন্দবাজার | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • হাওড়ার কেন্দ্রস্থল থেকে কেএমডিএ-র পানীয় জল সরবরাহের প্রধান দফতর ‘ব্যক্তিগত স্বার্থে’ স্থানান্তরিত করা নিয়ে ওই দফতরের কয়েক জন পদস্থ কর্তার বিরুদ্ধে আগেই অভিযোগ করেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় উচ্চপদস্থ কর্তাদের হস্তক্ষেপে অফিস স্থানান্তর তখনকার মতো স্থগিত হয়ে যায়। কিন্তু অভিযোগ, এর পরেই জগাছা এলাকার দু’টি ওয়ার্ডে যে জলাধার থেকে জল সরবরাহ করা হত, তা মেরামতি করানোর পরেও বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এর ফলে গত দু’বছর ধরে চরম জল-সঙ্কটে ভুগছেন প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দা।

    এলাকাবাসীদের অভিযোগ, যে পদস্থ কর্তারা অফিস স্থানান্তরের চেষ্টা করছিলেন, তাঁরাই ওই জলাধারটি মেরামতের কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে জল সরবরাহ বন্ধ রেখেছেন। বাসিন্দাদের হুঁশিয়ারি, গ্রীষ্মের আগে জলাধারটি চালু না করলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।

    স্থানীয় সূত্রের খবর, জগাছার মুচিপাড়া এলাকায় কেএমডিএ ক্যাম্পাসের মধ্যে পুরনো আমলের ১ লক্ষ গ্যালন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি জলাধার রয়েছে। হাওড়ার পদ্মপুকুর জলপ্রকল্পের পাইপলাইন যে হেতু ৪৭ এবং ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডেরসব জায়গায় নেই, তাই ওই জলাধার থেকে ওই দুই ওয়ার্ডের প্রায় ৩০হাজার বাসিন্দাকে পানীয় জল সরবরাহ করা হত। বছর দুয়েক আগে ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে জলাধারটি মেরামত করা হয়। অভিযোগ, তার পরেও সেখান থেকে জল সরবরাহ করা শুরু হয়নি।

    এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা অমর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে ওই ট্যাঙ্কের জল খাচ্ছি। হাওড়া-আমতা শানপুর মোড় থেকে কেএমডিএ-র অফিস সরিয়ে নেওয়ার বিরোধিতা করায় ওই জলাধারটি সংস্কারের নাম করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি মেরামতির পরেও জল সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।’’

    যদিও কেএমডিএ-র তরফে দাবি, দীর্ঘদিনের ওই জলাধারের বহু জায়গায় ফাটল ধরেছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জলাধারের স্তম্ভগুলিও। তাই মেরামত করা জরুরি ছিল। তা ছাড়া যে সব এলাকায় ওই জলাধারের জল সরবরাহ হত, সেই সব জায়গায় অন্য একটি জলাধার থেকে বর্তমানে জল সরবরাহ করা হয়। তাই জলসঙ্কট হওয়ার কথা নয়।

    তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই একটি ট্যাঙ্কের জল এলাকার সব বাড়িতে পৌঁছয় না। ফলে বছরের প্রায় সব সময়েই জলসঙ্কট লেগে থাকে। আর গ্রীষ্মে তা মারাত্মক আকার নেয়। ওই সময়ে জলের চাপ কম থাকায়কল দিয়ে সরু হয়ে জল পড়ে। গত বছরেই এই পরিস্থিতি হয়েছিল। বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে পুরনো জলাধারটি চালু না হলে আসন্ন গ্রীষ্মে মানুষ চরম সমস্যায় পড়বেন। এ জন্য তাঁরা গণস্বাক্ষর করা আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন কেএমডিএ-র কাছে। তবে কোনও ফল হয়নি।

    স্থানীয় বাসিন্দাদের জলাধার সংক্রান্ত এই অভিযোগ নিয়ে কলকাতায় কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার শিশির বৈদ্য বলেন, ‘‘এই ঘটনা এলাকাবাসীরা লিখিত ভাবে আমায় জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে হাওড়ার অফিসে যাঁরা আছেন, তাঁদের কাছে জানতে চাইব কেন ওই জলাধারটি এখনও চালু করা যায়নি।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)