• Kunal Ghosh : পা বাড়িয়েই পদ্মের ১৯, কুণাল-কথায় জোর জল্পনা
    এই সময় | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • এই সময়: সুমন কাঞ্জিলালের (Suman Kanjilal) দলবদলের রেশ কাটার আগেই রাজ্য বিজেপির সংসদীয় ও পরিষদীয় দলে আরও বড় ভাঙনের ইঙ্গিত দিল তৃণমূল। বিজেপির অন্তত ১৩ জন বিধায়ক এবং ৬ জন সাংসদ জোড়াফুল নেতৃত্বের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলে সোমবার দাবি করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। এই সাংসদ-বিধায়কদের অনেকেই বিভিন্ন সময়ে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে কখনও দিল্লিতে, কখনও কলকাতায়, কখনও জেলায় সাক্ষাৎ করেছেন বলে দাবি কুণালের। দলবদলে আগ্রহী বিজেপির এই সাংসদ-বিধায়কদের হাতে কবে জোড়াফুলের ঝান্ডা তুলে দেওয়া হবে--সেই সিদ্ধান্ত ঠিক সময়ে (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় () নেবেন বলেও কুণাল জানিয়েছেন। বিজেপির পরিষদীয় দলে আচমকা ধাক্কা দিয়ে রবিবার ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। ২৪ ঘণ্টা কাটার আগেই গত লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনেত্রী কাঞ্চনা মৈত্র ফেসবুক পোস্ট করে গেরুয়া শিবির ছাড়ার কথা জানিয়েছেন। এই আবহেই কুণাল সোমবার বলেন, 'বিজেপির একাধিক বিধায়ক আর বিজেপিতে থাকতে চান না। এই সংখ্যা তেরোর নীচে নয়, উপরে হতে পারে। নির্দিষ্ট সংখ্যা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলতে পারবেন। এঁদের অধিকাংশ ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের অফিসে, অথবা দিল্লিতে, অথবা দিদি যখন জেলা সফরে থাকেন সেই সময় দেখাসাক্ষাৎ সেরেছেন। অন্তত ১৩ জন বিধায়ক ও অন্তত ৬ জন সাংসদ তৃণমূলে যোগদানে আগ্রহের কথা খোলাখুলি জানিয়েছেন।'

    প্রশ্ন উঠেছে, এঁদের কবে শিবির বদল করতে দেখা যাবে? কুণালের বক্তব্য, 'এই বিষয়ে ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেবেন। সেই সিদ্ধান্তের আগে পর্যন্ত এঁদের বলা হচ্ছে বিজেপিতে থাকুন। কেউ দিলীপ ঘোষের সঙ্গে থাকুন, কেউ শুভেন্দুর সঙ্গে থাকুন, কেউ সুকান্তর সঙ্গে থাকুন এবং বিজেপির কোন মিটিংয়ে কী হচ্ছে, কে কী বলছে, আমাদের জানাতে থাকুন।' এই দলবদলে কিছুটা সময় লাগবে বলেই তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য। কুণালের ব্যাখ্যা, এঁদের সম্পর্কে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব কী বলছেন, সেই বিষয়টিও দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের বিবেচনায় রয়েছে। বিজেপির বিভিন্ন স্তরের পদাধিকারী, পুরসভা ও ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরাও তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন বলে শাসকদলের দাবি। তবে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে বিজেপির ১৯ সাংসদ-বিধায়কের তৃণমূলের দিকে পা বাড়িয়ে থাকা নিয়ে কুণালের দাবিতে। যদিও বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, 'তৃণমূল আসলে দুর্নীতি থেকে চোখ ঘোরাতে এই সব কথা বলছে। ওদের দৈন্যদশা প্রকাশ পাচ্ছে। পাগলের প্রলাপ বকছে। এই সব করে কয়লা চুরি, যারা করেছে তাদের জেলযাত্রা কি ওঁরা ঠেকাতে পারবেন?'

    বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় এ দিন আলিপুরদুয়ার শহরে বিজেপি ধিক্কার মিছিল বের করে। কালো হরফে 'গদ্দার' লেখা ব্যানার নিয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা মিছিল করেন। তবে সুমনের দাবি, 'আমার বিধানসভার প্রান্তিক এলাকায় আরও ভালো পরিষেবা দিতেই এই সিদ্ধান্ত। অনেক প্রকল্পে মানুষ টাকা পাচ্ছেন, অথচ বিজেপি নেতারা বলছেন কেন্দ্রের টাকা আটকে দেওয়া হবে। এই নিয়ে মানুষও প্রশ্ন তুলছেন।' সুমন এই যুক্তি দিলেও বিজেপি পরিষদীয় দলের একাংশের বক্তব্য, ব্যক্তিগত কারণেই আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক দলবদল করেছেন। সুমন সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিলেও কাঞ্চনা মৈত্র অবশ্য আপাতত রাজনীতি থেকেই দূরে থাকার কথা বলেছেন ফেসবুক পোস্টে। ২০১৯-এ টলিউডের ১২ জন তারকার একটি দল দিল্লিতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। সেই দলে ছিলেন কাঞ্চনা। ২০২১-এর বিধানসভা ভোট পর্যন্ত বিজেপির সভা-সমিতিতে দেখা যেত তাঁকে।
  • Link to this news (এই সময়)