সরকারি হোমে পড়ুয়ার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার! নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
এই সময় | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
West Bengal News : সরকারি হোমে এক আবাসিক ছাত্রের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল বাঁকুড়া (Bankura) জেলার বিষ্ণুপুরে (Bishnupur)। দুর্গাপুরের (Durgapur) মামড়া বাজার এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রের নাম রাহুল বাউরী (১৬)। ওই ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সরকারি হোমের (Government Home) আবাসিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, দুর্গাপুরের (Durgapur) এমটিপিএস থানার মামড়া বাজার এলাকার ওয়াইকে নগরের বাসিন্দা, পেশায় দিনমজুর শিবু বাউরী অভাবের কারণে তাঁর দুই ছেলেকে প্রশাসনের মাধ্যমে বিষ্ণুপুরের সুমঙ্গলম হোমে রেখেছিলেন। তার মধ্যে মৃত ছেলে রাহুল বাউরী ওই হোমের সুকান্ত কক্ষে থাকার পাশাপাশি স্থানীয় মড়ার সম্মিলনী হাই স্কুলে নবম শ্রেণীতে পড়ত। গত শনিবার ভিতর থেকে বন্ধ হোমের বাথরুমের দরজা ভেঙে গলায় কাপড় জড়ানো অবস্থায় তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়।
হোম সুপার (Bishnupur) থানায় বিষয়টি জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। এদিন মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এই বিষয়ে হোম কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে রাজী হয়নি। খবর পেয়ে বিষ্ণুপুরে এসে পৌঁছন মৃত আবাসিক ছাত্রের বাবা শিবু বাউরী। তিনি বলেন, “সোমবার ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়েই এখানে এসেছি”। মূলত স্ত্রীর সিদ্ধান্তেই ছেলেকে এই হোমে রাখা বলে তিনি জানান। এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “আমাদের অভাবের সংসার। দিন আনি দিন খাই। নিজেদেরই ঠিক মতন খাবার জোটে না। সেখানে দুই ছেলেকে কিভাবে মানুষ করতাম! তাই সরকারি হোমে দিয়েছিলাম দুজনকেই। কিন্তু এরকম সর্বনাশ হয়ে যাবে, কোনোদিন ভাবতে পারিনি”।
বাঁকুড়ার সম্মিলনী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক এই বিষয়ে জানান, “হোমের তরফে আমাদের স্কুলকে কিশোরের মৃত্যুর ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছেই ঘটনার কথা জেনেছি। ওই কিশোর বাধ্য ছাত্র ছিল। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা মর্মাহত”। এই নিয়ে পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে আমাদের অনুমান ওই কিশোর আত্মহত্যা করেছে। এই ঘটনা নিয়ে আমরা এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাইনি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে”। বিষ্ণুপুর শহর লাগোয়া মড়ার অঞ্চলে সুমঙ্গলম নামে একটি সরকারি হোম রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর পশ্চিম বর্ধমান জেলার শিশু কল্যাণ কমিটির তরফে ওই কিশোর এবং তার ভাইকে পাঠানো হয়েছিল সুমঙ্গলম হোমে। তার পর থেকে তারা থাকত ওই হোমেই।