• তৃণমূলের সুরেই আলোচনা চান সোনিয়া, ভিন্নমত রাহুল গান্ধীর
    বর্তমান | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • সন্দীপ স্বর্ণকার, নয়াদিল্লি : একদিকে, সংসদের বাইরে ধর্না। অন্যদিকে সভার মধ্যে বিরোধীদের বিক্ষোভ। সবমিলিয়ে লোকসভা-রাজ্যসভা মিনিট কয়েক চলেই মুলতুবি হয়ে গেল। কিন্তু আদানি ইস্যুতে প্রতিবাদের কৌশল নিয়ে বিরোধীরা তো বটেই, দ্বিধাবিভক্ত কংগ্রেসই। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, মতবিরোধ সোনিয়া-রাহুল গান্ধীর মধ্যেই। বিশেষ সূত্রে খবর, তৃণমূলের দেখানো পথই পছন্দ কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর। তিনিও চান আলোচনা। তারপর প্রধানমন্ত্রী যখন জবাবি ভাষণ দেবেন, তখন ‘ওয়াক আউট’ করা হোক। কিন্তু প্রতিবাদের রাস্তা ছেড়ে আলোচনায় রাজি হওয়ার মুখরক্ষার পথ খুঁজে পাচ্ছে না কংগ্রেস। কারণ, রাহুল আলোচনা চান না। 

    ঘনিষ্ঠ মহলে সোনিয়ার মত, প্রতীকী প্রতিবাদ শেষে আলোচনার মাধ্যমেই মোদি সরকারকে কোণঠাসা করা দরকার। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর বা রাজ্যসভায় পি চিদম্বরমের মতো নেতাদের মতও তাই।  অন্যদিকে, রাহুল তথা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, জয়রাম রমেশের মতো এমপিরা চাইছেন, আদানি ইস্যুতে সংসদের দুই কক্ষেই চলুক প্রতিবাদ। কংগ্রেস আমলে বিজেপি দিনের পর দিন হইহল্লা করে সংসদ অচল করেছে। সেই আয়নাই বিজেপিকে দেখানো উচিত। আর দলের পক্ষে সমানে চলুক প্রচার, সরকার আলোচনা থেকে পালাচ্ছে। রাহুল এদিন বলেছেন, ‘রাতারাতি আদানির ব্যবসার বাড়বাড়ন্তের পিছনে কোন শক্তি কাজ করছে, তা প্রকাশ্যে আসা উচিত। সাহস থাকলে মোদি সরকার সংসদে আলোচনা করুক।’ 

    সূত্রে খবর, আজ দুই সভাতেই রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের ওপর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের আলোচনা শুরু হবে। বুধবার লোকসভা এবং বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় তার জবাব দেবেন মোদি। শুক্র এবং সোমবার প্রধানমন্ত্রী অন্যত্র কর্মসূচিতে ব্যস্ত। সংসদে আসবেন না। তাই তার আগেই রাষ্ট্রপতির অভিভাষণ পর্ব মেটাতে মরিয়া সরকার। এদিন সংসদ মুলতুবি হওয়ার পর অধীরবাবু, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কানিমোঝি, সুপ্রিয়া সুলের তো বিরোধী দলের নেতানেত্রীর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনাও করেন সংসদ বিষয়কমন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি। 

    অনুরোধ করেন, ‘আমরা আলোচনায় তৈরি। সেখানে আপনাদের যা বলার বলুন। চাইলে তুলুন এলআইসি ইস্যুও। আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু অনুগ্রহ করে আলোচনা শুরু করতে দিন।’ যা শুনে তৃণমূল নেতৃত্ব তৎক্ষণাৎ জানিয়ে দেয়, আলোচনাই চাই। হল্লা নয়। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, ‘বিরোধীরা প্রায় ৯ ঘণ্টা বলার সময় পাবে। কেন তার সদ্ব্যবহার করব না। তাই কংগ্রেসের সঙ্গে হল্লায় নেই।’ কংগ্রেসকে তা সমঝে দিতে এদিন সোনিয়ার দলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ওয়েলে নামেননি টিএমসি এমপিরা। যাননি মল্লিকার্জুন খাড়্গের ডাকা বিরোধীদের বৈঠকেও। 
  • Link to this news (বর্তমান)