• ‘স্বনির্ভর হতে দিচ্ছেন না’, বিডিও-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ! বর্ধমানে বিক্ষোভ ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২৩:২০
    আনন্দবাজার | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • বিডিও স্বনির্ভর গোষ্ঠীর টাকা নিয়ে দুর্নীতি করছেন। এমনই অভিযোগ করে কেন্দ্রের পরিদর্শক দলের গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। মঙ্গলবার বিকেলে এমনই ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। যা নিয়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। যদিও এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন জামালপুর ব্লকের বিডিও।

    কেন্দ্রের দেওয়া টাকায় পঞ্চায়েত এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ কী ভাবে হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে জামালপুর ব্লকে যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। ওই প্রতিনিধিরা চকদিঘি পঞ্চায়েত এলাকার সরকারি প্রকল্পের কাজ দেখে জামালপুর ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসের দিকে যাচ্ছেন, এই খবর পেয়ে পঞ্চায়েত অফিসে আগেই জড়ো হয়ে ছিলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর শতাধিক সদস্যা। মেমারি-তারকেশ্বর রোডে নতুনগ্রামে এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের গাড়ি পৌঁছনো মাত্র পরিস্থিতি ঘোরালো ওঠে।

    বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর টাকা নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকছে না। উল্টে বিডিওর সঙ্গে ‘যোগসাজশ’ করে অন্য অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। সেখানেই মোটা অঙ্কের টাকা ঢুকছে। সেই টাকা আবার তুলেও নিচ্ছে কেউ। এক সদস্যার কথায়, ‘‘এই ছলচাতুরির জন্য ব্লকের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা স্বনির্ভর হতে পারছেন না।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘‘বিডিও-র মদতে জামালপুর ব্লকের সমবায়গুলি দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। গাছ কাটা থেকে হাঁস-মুরগি বিলি, সবেতেই দুর্নীতি হচ্ছে।’’ পূর্ণিমা ঘোষ, উমা দাসদের দাবি, তাঁরা কয়েক জন মিলে দু’দফায় জামালপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। পুলিশকে জানিয়েছেন,স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করে সমস্ত লেনদেন যাচাই করা হোক। প্রয়োজনে সমবায় বন্ধ রেখে তদন্তের করেছেন। পাশাপাশি সমবারের নথি চুরির অভিযোগে মহকুমা শাসক (বর্ধমান দক্ষিণ)-র কাছে অভিযোগ করেছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা।

    ব্লকের একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রী মিরাতাজ শেখ এদিনের বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘জামালপুর ব্লক সমবায়গুলিতে ‘নকল বোর্ড’ তৈরি করে বিডিও এই তছরুপে যুক্ত রয়েছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের কাছে এই সব দুর্নীতির কথা তুলে ধরতেই জড়ো হই আমরা।’’ পরে ব্লক অফিসের আধিকারিকরা ওই বিক্ষোভ প্রশমন করেন। তাঁদের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

    অন্য দিকে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বিডিও (জামালপুর) শুভঙ্কর মজুমদার বলেন, “যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে তার কোনওটার সঙ্গে আমি কোনও ভাবে যুক্ত নই। ‘বৃক্ষ পাট্টা’র চুক্তি হয় পঞ্চায়েত আর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে। গাছ বিক্রির টাকা ঢোকে তাদের অ্যাকাউন্টে ঢোকে। তেমনি হাঁস মুরগি বিলি করে প্রাণী বিকাশ দফতর। তারাই উপভোক্তা ঠিক করে। আর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পাল্টানো বা বদলানোর ক্ষমতা কারও নেই।’’ বিডিওর দাবি, তাঁকে বদনাম করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এই মিথ্যা রটনা হচ্ছে। যদিও কারা এতে যুক্ত তা স্পষ্ট করে বলেননি তিনি।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)