একাধিক ইস্যুতে তৎকালীন রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পাশাপাশি, রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রীর সঙ্গেও বাগ্যুদ্ধে জড়াতেন ধনখড়। এমনকি, রাজ্যপালের ভাষণের সম্প্রচার-সহ একাধিক ইস্যুতে চিঠি চালাচালির পাশাপাশি বিবৃতি পাল্টা বিবৃতির লড়াইয়ে জড়িয়েছিলেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। রাজ্য সরকার ও বিধানসভার স্পিকারের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির জেরে কখনওই রাজ্যপাল ধনখড়ের ভাষণ বিধানসভা থেকে সম্প্রচারের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
কিন্তু এ বার পরিস্থিতি ভিন্ন। নতুন রাজ্যপাল আনন্দ বোস রাজ্য সরকারের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে চলছেন। সোমবার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন রাজ্যপাল। মমতার সঙ্গে তুলনা টেনেছেন, অটলবিহারী বাজপেয়ী থেকে শুরু করে উইনসটন চার্চিলের। আবার সরস্বতী পুজোর দিন রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ঘটা করে হাতেখড়ি নিয়েছেন আনন্দ বোস। বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে তাঁর এমন ভূমিকার নিন্দা করলেও, তাতে আমল না দিয়ে নিজের মতো করেই চলেছেন রাজ্যপাল। আর রাজ্য সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলার ফল হিসেবে বুধবার রাজ্যপালের বক্তৃতার সম্প্রচারের অনুমতি দিয়েছে বিধানসভার সচিবালয়, এমনটাই মত বাংলার রাজনীতির বৃত্তে থাকা ব্যক্তিদের।
২০১৯ সালের অগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের দায়িত্বে আসেন ধনখড়। ২০২২ সালের জুলাই মাসে উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে পর্যন্ত বিধানসভায় ৪টি বাজেট বক্তৃতা করেছিলেন তিনি। সংঘাতের পরিবেশে কোনও বারই তাঁর বক্তৃতার সম্প্রচারের অনুমতি দেওয়া হয়নি। যদিও কখনও বিধানসভার সচিবালয় প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে সে কথা জানায়নি। বরং কোভিড সংক্রমণের জেরে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হলে, রাজ্যপালের বাজেট বক্তৃতা দেখানো সম্ভব হয়নি বলেও যুক্তি দেখানো হয়েছিল। ক্ষোভে ধনখড় একাধিক টুইট করে বিবৃতি দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজভবনে আনন্দ জমানায় সেই সংঘাতের পরিবেশ যেন উধাও, তাই বিবাদ না থাকায় বিধানসভায় ফিরছে সম্প্রচার রীতি।