• ফার্মাসিস্ট দিয়েই কাজ চলছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের, স্থায়ী চিকিৎসকের দাবি
    বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: শালকুমার-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ৫০ হাজার বাসিন্দা মুন্সিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। অথচ গত দেড় বছর ধরে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোনও স্থায়ী চিকিৎসক নেই। অবস্থা সামাল দিতে ব্লক থেকে সপ্তাহে তিনদিন চিকিৎসক পাঠানো হয় মুন্সিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বাকি দিনগুলি চলে স্রেফ একজন ফার্মাসিস্ট দিয়ে। নেই কোনও শয্যার ব্যবস্থা। অর্থাৎ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি নন বেডেড। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এভাবে কোনও হাসপাতালের চিকিৎসা চলতে পারে না। শয্যা চালু্ করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে একজন স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। স্বাস্থ্যদপ্তর অবশ্য দ্রুত মুন্সিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন স্থায়ী চিকিৎসক দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

    জলদাপাড়া জঙ্গল দিয়ে ঘেরা শালকুমার-১ ও ২ এই দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা মুন্সিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভর করে থাকেন। বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে আজও শয্যা সহ অন্তর্বিভাগ চালু্ হয়নি। শুধুমাত্র বহির্বিভাগ দিয়েই চলছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। তাও সপ্তাহে চার দিন কোনও চিকিৎসক থাকেন না। শুধুমাত্র এলাকার গর্ভবতী মহিলাদের চিকিৎসার জন্য সপ্তাহের সোম, বুধ ও শুক্রবার এই তিন দিন ব্লক থেকে চিকিৎসক পাঠানো হয়। শালকুমার-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গণপতি কার্জি বলেন, এভাবে কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলতে পারে না। শয্যা না থাকায় রাতবিরেতে মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আমাদের ৩০ কিমি দূরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে যেতে হয়। এই এলাকায় সহজে আবার অ্যাম্বুলেন্সও পাওয়া যায় না। তাই আমাদের দাবি, মুন্সিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যা চালু করে একজন স্থায়ী চিকিৎসক দেওয়া হোক। শালকুমার হাট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির কোষাধ্যক্ষ রাণা গুহ বলেন, যেহেতু জঙ্গল দিয়ে ঘেরা, সেজন্য এই এলাকার চিকিৎসা পরিকাঠামোয় অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত স্বাস্থ্যদপ্তরের। কিন্তু স্বাস্থ্যদপ্তরের সেই উদ্যোগ চোখে পড়ে না। স্থায়ী চিকিৎসকের দাবিতে স্বাস্থ্যদপ্তরে বহুবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজও কোনও কাজ হচ্ছে না। দু’টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রধানপাড়া, সিধাবাড়ি, নতুনপাড়া, জলদাপাড়া ও মুন্সিপাড়ার মতো গ্রামগুলির চারপাশেই জঙ্গল। এলাকার বাসিন্দা অনন্ত অধিকারী বলেন, জঙ্গলঘেরা গ্রাম হওয়াতেই সমস্যা। জঙ্গল থাকায় রাতে কেউ হঠাৎ করে অসুস্থ হলে পাঁচকেলগুড়ি ব্লক হাসপাতাল বা জেলা হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স মেলে না। সেজন্য মুন্সিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দ্রুত স্থায়ী চিকিৎসক চাইছি। 

    আলিপুরদুয়ার-১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ভাস্কর সেন অবশ্য বলেন, মুন্সিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক না থাকার সমস্যাটি নিয়ে আমরা ওয়াকিবহাল। আসলে জেলায় চিকিৎসকের অভাব।  সেজন্য মুন্সিপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী চিকিৎসক দিতে সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুত এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্থায়ী চিকিৎসক দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
  • Link to this news (বর্তমান)