• দিনে গরম, রাতে ঠান্ডায় বিপত্তি সর্দি-জ্বর ও কাশিতে কাবু জেলার শিশু থেকে বয়স্ক
    বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে একটি বেঞ্চে বসে বুকে হাত দিয়ে লাগাতার কেশেই যাচ্ছেন এক বৃদ্ধ। পাশে বসা এক কিশোরও লাগাতার হাঁচছে। মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসককে দেখানের জন্য লাইনে জ্বর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে অন্তত শতাধিক রোগী। কেউ কেউ এতটাই দুর্বল যে লাইনের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে মেঝেতেই বসে পড়ছেন। গত কয়েকদিন ধরে এভাবেই জ্বর, সর্দি ও কাশিতে কাবু হয়ে চিকিৎসকদের কাছে ভিড় বাড়াচ্ছেন রোগীরা।  

    দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা। তাপমাত্রার ব্যাপক হেরফের ঘটায় ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত শিশু থেকে বৃদ্ধ। চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধরনের আবহাওয়ার জেরে ভাইরাস ঘটিত অসুখ বাড়ছে। বয়স্ক থেকে শিশু, সকলেই জ্বর, সর্দি, কাশি এবং ডাইরিয়া সহ পেটের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। জ্বর ও কাশি নিয়ে এক সপ্তাহের কাছাকাছি ভোগাচ্ছে মানুষকে। 

    মেডিক্যাল কলেজে আসা রোগীরা অধিকাংশই বলছেন, এত কাশি হচ্ছে যে বুক ও পেট ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা তো আছেই। 

    অনেকে আবার বলেন, হঠাৎ করে কীভাবে ঠান্ডা লেগে গেল জানি না। সর্দি বসে গিয়েছে। কাশির সঙ্গে বেশ সর্দি উঠছে। 

    দিনের সঙ্গে রাতের তাপমাত্রার হেরফের ঘটছে অনেকটাই। তার জেরেই জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে কাবু মানুষ। মুর্শিদাবাদ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, গত কয়েকদিনে পারদ নেমেছে সন্ধ্যার পর। আর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চড়চড় করে বাড়েছে তাপমাত্রা। এর প্রভাব পড়েছে মানবদেহে। ভোর পাঁচটার দিকে তাপমাত্রা থাকছে ২০-২২ ডিগ্রির আশেপাশে। বেলা বাড়তেই সেই তাপমাত্রায় পৌঁছে যাচ্ছে ২৮ ডিগ্রিতে। বেলা গড়াতেই কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সেই তাপমাত্রা নেমে যাচ্ছে ১৯-২০ ডিগ্রির কাছাকাছি। মাঝ রাতের দিকে তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে ১৭-১৮ ডিগ্রি হচ্ছে। 

    মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের চিকিৎসক কৃশানু দে বলেন, এই সময় ঠান্ডা ও গরমের যে তারতম্য তাতে বিভিন্ন  ভাইরাস সহজে বংশ বিস্তার করতে পারে। সে কারণেই সর্দি, কাশি, জ্বর বাড়ছে। এই সময় অ্যালার্জি বাড়ে বাচ্চাদের। এছাড়া কনজাংটিভাইটিস ও ফ্যারিঞ্জাইটিস রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। 

    চিকিৎসকদের পরামর্শ যে, এই সময় জ্বর হলে এক-দু’দিন বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করা যেতে পারে। জ্বর হলে জ্বরের ওষুধ খাবে। সর্দি ও কাশি হলে নির্দিষ্ট ওষুধ খেতে হবে। তবে প্রথমেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার দরকার নেই। 

    শোওয়ার আগে গরম ও ঠান্ডা জল মিশিয়ে গার্গল করতে হবে। উষ্ণ গরম জলে খেতে পারলে কাজ দেবে।
  • Link to this news (বর্তমান)