• চিকেন রোল, জলের বোতলের সূত্রই ধরিয়ে দিল আফতাবকে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডে দাবি তদন্তকারীদের
    বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • নয়াদিল্লি: অনলাইন ফুড ডেলিভারি অ্যাপে অর্ডার করা চিকেন রোল ও বেশ কয়েকটি জলের বোতল। এই সূত্র ধরেই দিল্লির চাঞ্চল্যকর শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডের পর্দাফাঁস করলেন তদন্তকারীরা। এই মামলায় আদালতে ৬ হাজার ৬০০ পাতার চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। তাতে পুলিস জানিয়েছে, ১৮ মে শ্রদ্ধাকে নৃশংস খুন করেন প্রেমিক আফতাব। সেদিনই ফুড ডেলিভারি অ্যাপ থেকে একটি চিকেন রোল অর্ডার দেন তিনি। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি জলের বোতলও। কিন্তু, কেন? সেই প্রশ্নেই নাকি খুনের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত। চার্জশিটে তা তুলে ধরেছে পুলিস। আফতাব জানিয়েছে, শ্রদ্ধা কথায় কথায় ঝগড়া ও হেনস্তা করতেন। তাই প্রেমিকার থেকে নিস্তার পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। ঘটনার দিন শ্রদ্ধাকে প্রথমে ধাক্কা মেরে মেঝেতে ফেলে দেন। তারপর প্রেমিকার বুকের উপর বসে দু’হাত দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন। এরপর দেহটি লুকিয়ে রাখেন বাথরুমে। শ্রদ্ধার সঙ্গে অভিযুক্তর বচসার কারণও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, দিল্লি থেকে দুবাই পর্যন্ত আফতাবের একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। শ্রদ্ধা সেকথা জানতে পারেন। সেই নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। 

    চার্জশিটে বলা হয়েছে, খুনের পর প্রমাণ লোপাট করতে শ্রদ্ধার দেহের ৩৫টি টুকরো করেন আফতাব। এরজন্য করাত, একটি হাতুড়ি ও তিনটি ছুরি ব্যবহার করেছিলেন তিনি। এগুলি দিয়ে দেহ টুকরোর সময় নিজের হাতের অনেকটা কেটে ফেলেছিলেন আফতাব। স্থানীয় এক চিকিত্সকের পরামর্শে সেই ক্ষতে পাঁচটা সেলাইও পড়ে। চার্জশিটে পুলিস আরও জানিয়েছে, বাথরুম থেকে রক্তের দাগ মুছতে অনলাইন ডেলিভারি অ্যাপ থেকে টয়লেট ক্লিনার, চপিং বোর্ড, গ্লাস ক্লিনার, হ্যান্ড ওয়াশ অর্ডার করেছিলেন আফতাব। শ্রদ্ধার ফোন ও ঠোঁট একটি প্ল্যাস্টিকে মুড়ে চলন্ত ট্রেন থেকে মহারাষ্ট্রের ভাসাই এলাকার ফেলে দেন। প্রাথমিকভাবে দেহের সব টুকরোগুলিই এভাবে লোপাট করার পরিকল্পনা করেছিল শ্রদ্ধার লিভ-ইন পার্টনার। কিন্তু, ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন। ফলে দীর্ঘদিন ফ্রিজের মধ্যে দেহাংশ লুকিয়ে রেখেছিলেন তিনি। পুলিস জানতে পেরেছে, কোনও বান্ধবী এলে শ্রদ্ধার দেহ রান্নাঘরে রেখে আসত আফতাব। পরে তা ফিরিয়ে আনা হতো।  অভিযুক্তকে জেরায় আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, পাথর ভাঙার মেশিন দিয়ে শ্রদ্ধার হাড় গুড়ো গুড়ো করে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছিল আফতাব।  
  • Link to this news (বর্তমান)