• দেশ চালাচ্ছে আদার ব্যাপারীরা, ত্রিপুুরার মঞ্চে রণংদেহী মমতা
    বর্তমান | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • বিশেষ সংবাদাতা, আগরতলা: রাজনীতির আঙিনায় তিনিই গত কয়েক বছরে বিজেপি বিরোধী প্রধান মুখ। লক্ষ্য তাঁর একটাই, গেরুয়া শাসন উৎখাতের প্রত্যয় প্রত্যেক বিরোধী দল এবং মানুষের মনে বপন করা। বাংলার মাটি হোক, বা ত্রিপুরার মঞ্চ—এই লক্ষ্য থেকে পিছু হটেন না তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার প্রমাণ আরও একবার তিনি দিলেন আগরতলায়। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে ভোট ১৬ ফেব্রুয়ারি। ২৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। আর তা যে স্রেফ নাম কা ওয়াস্তে নয়, সেই অঙ্গীকার মঙ্গলবার তাঁর প্রতি পদক্ষেপে তুলে ধরলেন মমতা। সরাসরি আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের দলকে। নাম না করেও বেআব্রু করে দিলেন কেন্দ্রের সরকারের কর্পোরেট সখ্যকে। সাফ বললেন, ‘দেশ চালাচ্ছে আদার ব্যাপারীরা। চারদিন আগেই তো সরকার পড়ে যেত। টিমটিম করে জ্বলছে এলআইসি, এসবিআই। নিভে যাবে।’

    সোমবার ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিয়ে সঙ্কল্প করেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি বিরোধী সেই সঙ্কল্পেরই রেশ পাওয়া গিয়েছে এদিন তাঁর পদযাত্রা ও জনসভায়। পাশে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে পাঁচ কিমি পথ অতিক্রম করেন মমতা। ওই পদযাত্রায় কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক ছাড়াও সঙ্গে ছিলেন সুস্মিতা দেব, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, পীযূষ বিশ্বাস, অনন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দলের বিভিন্ন কেন্দ্রের প্রার্থীরা। সুর বাঁধা হয়ে যায় সেখানেই। পদযাত্রা থেকে জনসভা—সর্বত্র মমতা ছিলেন রণংদেহী মেজাজে। তাঁর প্রতি শব্দে ঝরে পড়েছে বিজেপিকে নিশানায় বেঁধে হুঙ্কার। বলেছেন, ‘ডাবল ইঞ্জিন সরকার দিল্লিকে ডুবিয়েছে। ত্রিপুরাকেও। নির্বাচন এলেই এদের দেখা পাওয়া যায়। তারপরই বিজেপি নেতাদের ‘তোমার দেখা নাই রে’ দশা হয়ে যায়।’ এরপরই তাঁর সংযোজন, ‘এখানে সিপিএম-কংগ্রেস এক হয়ে লড়াই করছে। আর বাংলায় বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস জোট করে আমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে, প্রার্থী দেয়। লজ্জা করে না? ত্রিপুরায় এক রকম রাজনীতি, আর বাংলায় আরেক রকম!’ ত্রিপুরায় মানুষকে মমতার আশ্বাস, ‘অপদার্থ সরকারকে ছুড়ে ফেলে দিন। আস্থা রাখুন আমাদের উপর। বাংলায় যেভাবে উন্নয়ন হয়েছে, যেভাবে মানুষ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন, এখানেও তাই হবে। পশ্চিমবঙ্গের মতো এখানেও মানুষ পাবেন বিনামূল্যে চিকিৎসা, ন্যায্যমূল্যের দোকান। ত্রিপুরায় পর্যটনের একটা বড় আকর্ষণ মাতাবাড়ি মন্দির। সেটাকেই ওরা সাজাতে পারেনি। বহু বছর আগে যেমন ছিল, তেমনই আছে। সংস্কারই হয়নি। অথচ আমরা বাংলার সব ক’টি ধর্মীয় স্থানকে সুন্দরভাবে সাজিয়েছি। দেখে আসুন দক্ষিণেশ্বর, কালীঘাট। পার্থক্যটা বুঝবেন।’ আর বহিরাগত তত্ত্ব? তারও জবাব দিয়েছেন বাংলার অগ্নিকন্যা। বলেছেন, ‘ত্রিপুরা ও বাংলার সংস্কৃতি এক, রান্নাবান্না-ভাষাও এক। এখানে সবাই ভূমিপুত্র। এই রজ্যে সরকার গড়বে এখানকারই মানুষ। কথা দিচ্ছি আমি। তৃণমূল যা কথা দেয়, সেটা রাখে।’  আগরতলায় মমতা। -পিটিআই
  • Link to this news (বর্তমান)