• সোনিয়া কি অবসর নিচ্ছেন, প্লেনারি অধিবেশনে তাঁর মন্তব্য ঘিরে জোর জল্পনা 
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
  • রায়পুর, ২৫ ফেব্রুয়ারি — কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী কি অবসরের ইঙ্গিত দিলেন। রায়পুরে কংগ্রেস প্লেনারি সেশন তাঁর একটি মন্তব্য থেকে এমনই জলপনা ছড়িয়েছে কংগ্রেস মহলে। অধিবেশনে নিজের ভাষণের সময় সোনিয়া বলেছেন, ‘‘যা আমাকে সবচেয়ে বেশি তৃপ্ত করে, তা হল আমার যাত্রা ভারত জোড়ো যাত্রার মাধ্যমেই শেষ হতে পারে।’’

    পুত্র রাহুলের কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ভারত জোড়ো যাত্রার একরাশ প্রশংসা করলেন সোনিয়া। তাঁর মতে, ‘‘ভারত জোড়ো যাত্রা দলের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়। এই যাত্রা প্রমাণ করেছে যে, ভারতের জনগণ সম্প্রীতি, সহনশীলতা এবং সাম্য চান।’’ সেই সঙ্গেই বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু, দলিত, আদিবাসী, মহিলাদের বিরুদ্ধে বিজেপি ঘৃণার আগুন ছড়াচ্ছে।’’
    তাঁর এদিনের বক্তব্য ছিল রীতিমতো আবেগপ্রবণ। কংগ্রেস এর ৮৫ তম অধিবেশনে তিনি বলেছেন, মনমোহন সিং এর নেতৃত্বে ২০০৪ এবং ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে জয় তাঁকে তৃপ্ত করেছে। কিন্তু সেই তৃপ্তি ভারত জোড়ো যাত্রার মধ্যেই শেষ হতে পারে। এই যাত্রা যে ডুবন্ত কংগ্রেসকে রাজনীতির ময়দানে ফিরিয়ে এনেছে কংগ্রেস নেতারা তা বিলক্ষণ জানেন। সোনিয়া বলেছেন, এই যাত্রার মাধ্যমেই কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াবে।

    ১৯৯৮ সালে সোনিয়া যখন কংগ্রেস সভানেত্রীর দায়িত্ব নেন তখন তাঁর দল মাত্র তিন রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল। এখন কংগ্রেস আছে মাত্র দুটি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেস মুক্ত ভারত গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর কংগ্রেস-এ ব্যাপক ভাঙ্গন হয়। বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে দেশ পরিচালনা করছেন মোদী। কংগ্রেস এর শীর্ষস্তরেও ব্যাপক কোন্দল দেখা দিয়েছে। বিজেপি বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গেও কংগ্রেস এর দূরত্ব বেড়েছে। এর মধ্যে রাহুলের ভারত জোড়ো কতটা সুফল এনে দিতে পারবে, তা নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক মহলের অনেকেই।

    এদিনই তাঁর দীর্ঘ ভাষণে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে ‘২০০৪-এ কংগ্রেসের নেতৃত্বে ১৪ দলকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল ইউপিএ। সেই জোটকেই কংগ্রেস আবার শক্তিশালী করতে চায়।’ আরও বলেন, ‘আমরা সমমনোভাবাপন্ন দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাই।’ এখানেই থেমে না থেকে খাড়্গে দাবি করেন, ‘একমাত্র কংগ্রেস পারে বিজেপিকে হটিয়ে শক্তিশালী বিকল্প সরকার গড়তে।’ খাড়গের কথাতেই পরিষ্কার, নেতৃত্বের ক্ষমতা কংগ্রেস ছাড়তে রাজি নয় ।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)