• Durga Puja 2022: নামের পিছনে দৌড়নো নয়, সত্তরোর্দ্ধ ভিক্ষুককে দিয়ে পুজো উদ্বোধন বালি পাঠকপাড়া বারোয়ারির
    আজকাল | ০২ অক্টোবর ২০২২
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: আছে প্রাণের টান।

    পুজোয় যোগ দেওয়ার। বাধা শুধু বর্তমান পরিস্থিতির। কারণ, পরিচয় ভিক্ষুক। স্টেশনে ভিক্ষা করেই দিন কাটে। প্রতিবছর পুজো আসে আর চলেও যায়। ঢাকের বাজনা আর রঙিন জামাকাপড় পরা লোকদের দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। আশা থাকে যদি পুজোর দিনে কেউ যদি একটু বেশি পয়সা দেন, তবে ভাল কিছু খাওয়া যাবে। কোনও বছর হয়। আবার কোনও বছর হয় না।কিন্তু এবারের পুজোটা? হ্যাঁ, সত্যিই একেবারেই অন্যরকম। কারণ, পুজোর উদ্বোধনই হয়েছে তাঁর হাতে। রীতা বসু। বয়স ৭৫ বছর। এই মুহূর্তে ঠিকানা পূর্ব রেলের বেলুড় স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম। এবছর বালি পাঠকপাড়া বারোয়ারি পুজো সমিতির পুজো তিনিই উদ্বোধন করলেন। সঙ্গী ছিলেন তাঁরই মতো স্টেশনে বা স্টেশনের কাছাকাছি থাকা অন্যান্য ভিক্ষুকরা। 

    উদ্যোগের প্রশংসা করে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, 'ভালো উদ্যোগ এবং মুক্তমনের পরিচয়। যাঁরা নেতা-মন্ত্রী বা সিনেমার শিল্পীদের নিয়ে উদ্বোধন করান তাঁরাও যে সমাজসেবা করেন না তা কিন্তু নয়। ফলে অবশ্যই তাঁদেরকে ছোট করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু যাঁরা এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন বা সদিচ্ছার পরিচয় দিয়েছেন তাঁদেরকেও আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।' 

    এলাকার আর পাঁচটা পুজোর মতোই গত ৭৭ বছর হয়ে আসছে এই পুজো। আগে কোনওদিনই এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলেই জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। এবছর এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার পিছনে কারণ জানাতে গিয়ে পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা বৈশালি ভৌমিক বলেন, 'গতবছর থেকেই আমরা স্টেশনের প্রতিটি ভিক্ষুককে নতুন জামাকাপড় দিয়ে আসছি। দেওয়া হয় খাবারের প্যাকেটও। কিন্তু পুজো তো সকলেরই। তাই এঁদেরকেও আমরা পুজোয় একেবারে সক্রিয়ভাবে সামিল করার কথা ভাবলাম। সেজন্যই নতুন পোশাক দেওয়ার পাশাপাশি এঁদের মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক যিনি আছেন তাঁকে দিয়েই উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত। আগামীদিনে ইচ্ছে আছে আরও বেশি করে এঁদের সঙ্গে নিয়ে এগোনোর।' 

    এই পুজো উদ্যোক্তাদের এলাকায় পরিচিতি তৃণমূল কর্মী হিসেবে। যে কথা স্মরণ করিয়ে হাওড়া জেলা (শহর) তৃণমূলের সভাপতি কল্যাণ ঘোষ বলেন, 'এই উদ্যোগই প্রমাণ করে আমাদের দল সাধারণ মানুষের। সমাজের সর্বস্তরকে নিয়ে চলার ক্ষমতা আমাদের আছে। দলীয় কর্মীদের এই উদ্যোগের জন্য আমরা গর্বিত।' 

    আর রীতাদেবী, তিনি কী বলছেন? না, ভাষা নেই। চোখে আনন্দাশ্রু। বাঁচার ইচ্ছেটা আরও প্রবল হয়েছে। প্রতিমার কাছে হাতজোড় করে প্রার্থনা-আসছে বছর আবার এসো মা। দয়া করে আমাদের একটু দেখো। 
  • Link to this news (আজকাল)