• সেবার ব্রত নিয়েই শুরু হয় মুচিয়ার মহাদেবপুর যুবক সঙ্ঘের দুর্গাপুজো
    বর্তমান | ০২ অক্টোবর ২০২২
  • সিদ্ধার্থ সরকার, পুরাতন মালদহ: পুরাতন মালদহ ব্লকের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মহাদেবপুর যুবক সঙ্ঘ পরিচালিত  মহাদেবপুর পূর্বপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসব এক সময় বাংলাদেশ থেকে আসা উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের হাত দিয়ে শুরু হয়েছিল। এক দেশ থেকে আরেক দেশে আসার পর দুর্দশার হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতেই গড়ে উঠেছিল এই ক্লাব। যার ধারাবাহিকতা আজও ক্লাবের পরবর্তী প্রজন্ম বজায় রেখেছে। 

    ১৯৭২ সালে মুচিয়ার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন গ্রাম মহাদেবপুরের একদল উদ্যমী যুবক জগন্নাথ বর্মন, পঞ্চানন মণ্ডল, শিখা রায়, নারায়ণ মণ্ডল, শ্যামল দাস বর্মন সহ অনেকেই ভারতে এসে উপলব্ধি করেন যে মানুষের সেবায় নিয়োজিত হতে হবে। তাঁদের উদ্যোগেই পথচলা শুরু করেছিল এই ক্লাব। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এখন নেই। যদিও পুজো ও উৎসব এলাকার যুবক-যুবতী, মহিলারা  উৎসাহের সঙ্গে করে আসছেন। পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা বিশেষ করে রক্তদান কর্মসূচি, চক্ষু পরীক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা সহ বিভিন্ন ভাবে তাঁরা মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। করোনা পরিস্থিতি এবং লকডাউনের সময় মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ক্লাবের সদস্যরা। এলাকায় কারও কোনও সমস্যা হলেই ডাক পড়ে মহাদেবপুর যুবক সঙ্ঘের কর্মকর্তাদের। 

    এবারে তাদের পুজো ৫১তম বর্ষে পড়ল। বর্তমান ক্লাব সম্পাদক রয়েছেন বিনোদ দাস, সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সুজিত দাস বর্মন, পুজো পরিচালনার সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন সুস্মিতা দাস এবং সভাপতি সমাপ্তি ভট্টাচার্য। প্রতিমা আনয়ন বাদ দিয়ে বাদবাকি পুজোর সব বিষয় দেখছেন মহিলারা। ক্লাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহিলারাই জগজ্জননী মা। তাদের হাতে দেবী দুর্গার পুজোর সমস্ত ভার দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর দেবীমূর্তি ভিন্ন রূপে পূজিত হয়ে থাকেন। দেবীদুর্গাকে এবার বৈষ্ণবী রূপে পুজো করা হচ্ছে। তবে পুজো হয় বৈষ্ণব মতে। যেকারণে পুজো উদ্যোক্তারা এই থিমকে বেছে নিয়েছেন। প্রতিমা একচালা ও সাবেকি। কোনও বলি প্রথা নেই। তবে  মাকে সাধারণ ভোগ, ফলমূল, কলা, নৈবেদ্য নিবেদন করা হয়। পুজো ঘিরে এলাকায় মহালয়ার পর থেকেই  উৎসবের আমেজ থাকে। 

    এবিষয়ে মহাদেবপুর যুবক সঙ্ঘের উপদেষ্টা রামকৃষ্ণ সরকার বলেন, আমাদের পুজো এবছর ৫১তম বছরে পড়ল। জগজ্জননী মা বলে আমরা এবার মহিলাদের পুজোর দায়িত্ব দিয়েছি। আমরা পুজো পরিচালনা করলেও মহিলারা সমস্ত দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। পুজো পরিচালনার কমিটির সম্পাদক  সুস্মিতা দাস বলেন, আগে এলাকার যুবকরা পুজো পরিচালনা করলেও এবারে পুজোর সমস্ত দায়িত্ব আমাদের উপর তাঁরা ছেড়ে দিয়েছেন। আমরা চাই সবাই মিলে উৎসবে শামিল হতে। পাশাপাশি মানুষের আপদে বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে নিজেদের  মানবসেবায় উৎসর্গ করতে।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)