• স্থায়ী সম্পদ নির্মাণ প্রকল্পে সহায়তা ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণে শর্ত বেঁধে দিচ্ছে কেন্দ্র রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ
    বর্তমান | ১৪ মার্চ ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: রাজ্যগুলির আর্থিক ভান্ডার ক্রমেই তলানিতে। কমে আসছে নিজস্ব রাজস্ব বৃদ্ধির সুযোগও। এমতাবস্থায় আগামী আর্থিক বছরে স্থায়ী সম্পদ নির্মাণ সংক্রান্ত যে কোনও প্রকল্প রূপায়ণে কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা এবং দীর্ঘমেয়াদী ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে একঝাঁক শর্ত চাপানো হচ্ছে। বস্তুত এভাবে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ করে সরাসরি রাজ্যকে নির্দেশই ঩দেওয়া হবে। এই শর্ত আরোপ করা হচ্ছে আগামী আর্থিক বছর থেকে। রাজ্যগুলিকে মোট ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হবে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে। ১ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হবে সম্মিলিত তহবিল থেকে। আর বাকি ৩০ হাজার কোটি টাকা পেতে হলে কেন্দ্রের নির্ধারিত বিশেষ বিশেষ প্রকল্পই রূপায়িত করতে হবে। যেমন পুরনো মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি নষ্ট করে ফেলা, নগরোন্নয়নের সংস্কার, পুরসভার সংস্কার, পুলিশ কর্মীদের আবাসন, শিশু কিশোরদের জন্য গ্রন্থাগার নির্মাণ, ডিজিট্যাল পরিকাঠামো। এমনকী সরাসরি যে সম্মিলিত তহবিল থেকে ১ লক্ষ কোটি টাকা দেওয়া হবে, সেই ঋণের ক্ষেত্রেও থাকবে শর্তাবলী। প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার পর যদি ৭৫ শতাংশ অর্থ খরচ করা না হয়, তাহলে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হবে না। এরপর তৃতীয় কিস্তির টাকা পেতে হলে প্রথম দুই কিস্তির টাকার মোট ৭৫ শতাংশ ব্যয় করতে হবে। কেন্দ্র থেকে রাজ্যগুলি যে ফরমুলায় কেন্দ্রীয় রাজস্বের ভাগ পায়, সেই একই ফরমুলার শতকরা হিসেব অনুযায়ী এই ঋণের টাকাও দেওয়া হবে। আর সেই ফরমুলা অনুযায়ী, সবথেকে বেশি টাকা পাবে উত্তরপ্রদেশ। ১৭ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। এরপর বিহার ১০ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। পশ্চিমবঙ্গ পাবে ৭হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। ১ লক্ষ কোটি টাকার পাশাপাশি যে পৃথক ৩০ হাজার কোটি টাকা থাকবে, সেই টাকা কোন রাজ্য কীভাবে পাবে, তা কেন্দ্রের গাইডলাইন অনুসরণ করতে পারার উপর নির্ভর করবে।

     সোজা কথায়, রাজ্যগুলিকে সরাসরি এবার আর্থিক সহায়তা পেতে হলে একপ্রকার কেন্দ্র থেকে আসা প্রকল্পের প্ল্যান, বাস্তবায়ন এবং তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ মেনে চলতে হবে। আপাতত এই প্রক্রিয়া চালু হতে চলেছে সহায়তা ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে। 

    প্রসঙ্গত কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সম্প্রতি ঘোষিত বাজেটে জানিয়েছিলেন, আগামী আর্থিক বছরে ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হবে ৫০ বছরের জন্য। বিনা সুদে।  সেই টাকা যেখানে রাজ্যকেই মেটাতে হবে, তাহলে কেন কেন্দ্র আগাম নির্দেশ দিচ্ছে যে কোন রাজ্য কীভাবে কোন টাকা খরচ করবে? এক্ষেত্রে এমন প্রশ্নই উঠছে। কারণ, একই ধাঁচে সব রাজ্যকেই একই ধরণের প্রকল্প রূপায়ণ করতে হবে, এটা বিস্ময়কর। কিন্তু এভাবে কেন্দ্র চাইছে রাজ্যগুলিকে সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল করে তুলতে।
  • Link to this news (বর্তমান)