• সুচ-সুতো দিয়ে রাষ্ট্রপতির ছবি রবি ঠাকুর-কালামও এঁকেছেন দত্তপুকুরের জহর
    বর্তমান | ১৪ মার্চ ২০২৩
  • শ্যামলেন্দু গোস্বামী, বারাসত: রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু কবে আসবেন পশ্চিমবঙ্গে? অধীর হয়ে সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছেন জহর আলি মণ্ডল। সুচ দিয়ে সুতো বুনে কাপড়ে মানুষের মুখ ফুটিয়ে তোলেন জহরবাবু। এর আগে রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালাম, রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর প্রতিকৃতি তৈরি করেছিলেন। সেগুলি তুলে দিয়েছিলেন তাঁদের হাতে। জুটছিল তারিফ। এখন অপেক্ষা করছেন বর্তমান রাষ্ট্রপতির জন্য। 

    দত্তপুকুরের ছোট জাগুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বোরা গ্রামের বাসিন্দা আটান্ন বছরের জহর আলি। কুড়ি বছর বয়সে নিজের মামাদাদুর কাছে সুচ-সুতোর কাজ শেখা শুরু করেন। তারপর ধীরে ধীরে এই কাজে তাঁর হাতযশ বাড়ে। এখন শিল্পের নেশায় অধিকাংশ সময় কর্মস্থলে থাকেন। পরিবারের সদস্যরা সেখানেই পৌঁছে দেন দুপুর আর রাতের খাবার। দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করেন জহরবাবু। বয়স ষাট ছুঁই ছুঁই হলেও কাজের ভারে কাহিল হননি। সুচ আর সুতোকে নিয়ে বুনে চলেন ছবি। স্বপ্ন দেখেন একদিন দেশের মধ্যে শিল্পী হিসাবে নাম ছড়িয়ে পড়বে। তাঁর কারখানার পাশের একটি ঘরে অসংখ্য গুণীজনের ছবি ঝোলে। যা দেখার টানে অনেকে ছুটেও আসেন বোরা গ্রামে।

    জহরবাবু জানালেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজা রামমোহন রায়, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ছবি তৈরি করেছেন তিনি। কয়েকমাস ধরে দ্রৌপদী মুর্মুর ছবি তৈরির কাজ শেষ করেছেন। রাষ্ট্রপতির দপ্তরে এ বিষয়টি জানিয়ে ই মেল করে ছবিটি তাঁকে উপহার দেওয়ার প্রস্তাব দেন। জহরবাবু বললেন, ‘পুলিস আমার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে। ব্যক্তিগত কিছু কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষ। প্রশাসনিক আধিকারিকরা আমাকে জানিয়েছেন বাংলায় যখন রাষ্ট্রপতি আসবেন তখন আমি গিয়ে তাঁর হাতে উপহার তুলে দিতে পারব।’ স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন জানিয়েছেন, জহরবাবুর কাছে অনেকেই সুচ-সুতোর কাজ শিখছেন। মূলত মহিলারা এই কাজে বেশি ঝুঁকছেন। শিল্পী নিজে হাতে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেন। তিনি আমাদের গ্রামের গর্ব। 
  • Link to this news (বর্তমান)