• ক্রিকেট পণ্ডিতের নির্দেশে ঐচ্ছিক অনুশীলন বন্ধ নাইটদের
    আনন্দবাজার | ২২ মার্চ ২০২৩
  • ভারতীয় ক্রিকেটের ‘পণ্ডিতমশাই’ বলা হয় তাঁকে। কোচ হিসেবে মুম্বইকে একাধিক রঞ্জি ট্রফি জিতিয়েছেন। বিদর্ভ এবং মধ্যপ্রদেশের মতো দলও যে রঞ্জি ট্রফি জিততে পারে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। তাঁর প্রশিক্ষণের ধরনও অন্য রকম। ক্রিকেটারদের সঙ্গে যেমন বন্ধুদের মতো মিশতে পারেন, তাঁদের কড়া শাসনে রাখতেও দু’বার ভাবেন না। তিনি যদি হন বিশ্বের সবচেয়ে বিধ্বংসী অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল, তাতেও কিন্তু কোচের চোখে বাকিদের চেয়ে আলাদা নন ক্যারিবিয়ান তারকা।

    আইপিএলে এ বার কলকাতা নাইট রাইডার্সের দায়িত্বে রয়েছেন পণ্ডিত। নাইট শিবিরে এসেই তিনি ঘোষণা করে দিয়েছেন, ঐচ্ছিক অনুশীলন বন্ধ। নাইট সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুশীলনে না আসার কোনও সুযোগ নেই ক্রিকেটারদের। হোটেলে থেকে শুধু জিম করে একটা দিন কাটিয়ে দেওয়ার বিলাসিতা আর দেখাতে পারবেন না কেউই। অনুশীলনে না এলে হতে পারে শাস্তিও। আগে যেমন রাতের দিকে অনুশীলন করে ক্রিকেটারেরা নিজেদের মতো আনন্দ করতেন রাত জেগে, সে সবও এ বার বন্ধ হচ্ছে নাইট সংসারে। প্রত্যেক ক্রিকেটারকে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে যেতে হচ্ছে।

    আন্দ্রে রাসেল এত দিন ক্যারিবিয়ান সময় মেনে চলতেন। রাত দুটোয় জিমে ট্রেনিং শুরু করতেন। যা চলত ভোর চারটে পর্যন্ত। তার পরে খেয়ে ঘুমোতে যেতেন। রাসেলকেও এ বার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার। কোচ মনে করেন, দলে শৃঙ্খলা না এলে ট্রফি জেতা সম্ভব নয়। নাইট শিবিরেও শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করছেন পণ্ডিত।

    মঙ্গলবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সল্টলেক ক্যাম্পাসের মাঠে অনুশীলন হওয়ার কথা ছিল নাইটদের। কিন্তু বৃষ্টির জন্য তাদের বাস সল্টলেক থেকে রওনা দেয় ইডেনের উদ্দেশে। শেষমেশ ইন্ডোরেই অনুশীলন চলে বেঙ্কটেশ আয়ারদের। এ দিনই চলতি মরসুমে প্রথম বারের মতো নাইট জার্সিতে অনুশীলন শুরু করেন রাসেল। কলকাতায় আসার আগে মিরাটে ব্যাটের কারখানায় গিয়েছিলেন। নিজের পছন্দ মতো ব্যাট তৈরি করিয়ে কলকাতায় নিয়ে এসেছেন ‘ড্রে রাস’।

    অধিনায়ক শ্রেয়স আয়ারের ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনও সংশয়ে আছে কেকেআর। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট চলাকালীন কোমরে চোট পান তিনি। আমদাবাদে ব্যাট করতেও নামতে পারেননি। নাইট অধিনায়কের কোমরে অস্ত্রোপচার হবে কি না, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হতে পারছে না নাইট শিবির। সূত্রের খবর, বিশ্বকাপের আগে ফিট হতে গেলে শ্রেয়সকে অস্ত্রোপচার করাতে হতে পারে। ভারতীয় বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে নাইট কোচের। বোর্ডের মেডিক্যাল দল থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২৫ মার্চের মধ্যে শ্রেয়সের ভবিষ্যৎ জানিয়ে দেওয়া হবে। তার পরেই নতুন অধিনায়ক নিয়ে আলোচনায় বসবে নাইট ম্যানেজমেন্ট।

    নাইট শিবির এমন একজনকে অধিনায়ক হিসেবে চাইছে, যাঁকে মরসুমের সব ম্যাচ খেলানো যাবে। অর্থাৎ প্রথম একাদশ থেকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবাও হবে না তাঁকে। কিন্তু নাইট শিবিরে সুনীল নারাইন ও আন্দ্রে রাসেল ছাড়া মরসুমের প্রত্যেক ম্যাচে নিশ্চিত ভাবে খেলানোর ক্রিকেটার কি আছেন?

    আবু ধাবি নাইট রাইডার্সকে নেতৃত্ব দিয়েছেন নারাইন। কিন্তু তাঁর নেতৃত্বে ভাল ফল হয়নি দলের। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে জামাইকাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রাসেল। কিন্তু টানা কোনও দলের অধিনায়ক হিসেবে খেলেননি। নাইট শিবিরে কেউ কেউ বলছেন, বিদেশি অধিনায়ক দলের সকলের সঙ্গে সমান ভাবে মিশতে পারেন না। তাই স্বদেশী কোনও ক্রিকেটারকে অধিনায়ক করার ভাবনাও রয়েছে। নাইট অধিনায়ক কে হবেন, তা ২৬ মার্চের আগে পরিষ্কার হচ্ছে না।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)