• ১১ জনের চাকরি চেয়ে চিঠি, বিতর্কে বিধায়ক
    আনন্দবাজার | ২২ মার্চ ২০২৩
  • নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ফের বিতর্কে তৃণমূলের বিধায়ক (বর্ধমান উত্তর) নিশীথকুমার মালিক। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে প্রাথমিক স্কুলে ১১ জনকে চাকরি দেওয়ার জন্য বিধায়কের প্যাডে লেখা একটি চিঠি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (যার সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করে দেখেনি)। নামহীন চিঠিটিতে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা চাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের এক মন্ত্রী ও দুই বিধায়কের প্যাডেও চাকরির জন্য অনুরোধ জানানোর চিঠি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল এর আগে।

    মঙ্গলবার বিধায়ক দাবি করেন, ‘‘আমাদের কাছে নানা দাবি নিয়ে অনেক মানুষজন আসেন। তাঁদের দাবিগুলি মন্ত্রীদের কাছে চিঠি আকারে পাঠিয়ে দিই। প্রায় আড়াই বছর আগের ওই চিঠিতে ঠিক কী লেখা হয়েছিল আমার মনে নেই। আবার ওই চিঠিটা যে আমি পাঠিয়েছি, তার কী নিশ্চয়তা আছে!’’ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পাঠানো ওই চিঠিতে ১১ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের পাশে নির্দিষ্ট করে রোল নম্বর, দুজনের নামের পাশে ‘অ্যাপ্লিকেশন আইডি’ দেওয়া রয়েছে। ওই সব চাকরিপ্রার্থীরা প্রশিক্ষিত না অপ্রশিক্ষিত, সেটাও লেখা রয়েছে। বিধায়কের স্ট্যাম্প ও সই রয়েছে।

    শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যে একের পর এক অভিযোগ উঠছে। সিবিআই তদন্ত করছে। বিচারকের রায়ে অনেক শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীর চাকরি গিয়েছে। এর মধ্যে বিধায়কের ওই চিঠি সামনে আসতেই বিরোধীরা সরব হয়েছেন। বিধায়কের অবশ্য দাবি, ‘‘চিঠি দিয়ে কারও নাম পাঠানো মানেই তো চাকরি হয়ে যাওয়া নয়। চাকরি হয় একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে। সেটা ঠিক করে সংশ্লিষ্ট দফতর।’’

    সিপিএমের অভিযোগ, নির্দিষ্ট কয়েকজন নাম দিয়ে চাকরি চাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। কেন করা হল, তার তদন্ত করলেই দেখা যাবে চাকরির জন্য মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছে। দলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তৃণমূল চাকরির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছে আর যোগ্য প্রার্থীরা বসে আছে, অনশন করছে।’’ বিজেপির রাজ্য যুব নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারিও সমাজমাধ্যমে দাবি করেছেন, ‘‘বিধায়ক দুজনের নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেছিলেন চিঠিতে। সেই দুজনের চাকরি হয়েছে। ২০২০ সালের প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়াও যে দুর্নীতিতে ভরা তাতে কোনও সন্দেহ থাকল না।’’

    অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূলও। দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিধায়ক আদৌ ওই চিঠি পাঠিয়েছেন কি না, জানতে হবে। না কি তাঁর প্যাড ব্যবহার করে বিধায়ককে অপদস্থ করার জন্য কেউ কিছু করেছে, সেই খোঁজও নেওয়া দরকার। বিষয়টি যখন কানে এসেছে, সবিস্তার খোঁজ নেওয়া হবে। সত্যতা থাকলে দল নিশ্চিত ভাবেপদক্ষেপ করবে।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)