• Capital Punishment : মৃত্যুদণ্ডে ফাঁসির বিকল্প কী? কেন্দ্রকে খতিয়ে দেখতে পরামর্শ সুপ্রিম কোর্টের
    এই সময় | ২২ মার্চ ২০২৩
  • এই সময়, নয়াদিল্লি: ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করাই কি সব থেকে কম যন্ত্রণাদায়ক সাজার সেরা উপায়? বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখুক কেন্দ্রীয় সরকার৷ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামানিকে এমনই পরামর্শ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ৷ এই মর্মেই শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, 'মৃত্যুর মধ্যে যেন মর্যাদা থাকে, যতটা সম্ভব কম বেদনাদায়ক হতে হবে মৃত্যু৷'

    কেন্দ্রীয় সরকার যদি নিজেরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অপারগ হয়, তা হলে দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে তাঁরা বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দেবেন, যেখানে রাখা হতে পারে এইমস-এর বিশেষজ্ঞ চিকিত্‍সক, জাতীয় আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিজ্ঞানীদের, সাফ জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়৷

    এই প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'ফাঁসিতে মৃত্যুর প্রভাব, কতটা পরিমাণ ব্যথা হয়, কতক্ষণ সময় লাগে মৃত্যু হতে - এই সব বিষয়ে আমাদের কাছে সম্পূর্ণ তথ্য তুলে ধরুন৷ আজ বিজ্ঞান যেখানে দাঁড়িয়ে আছে, সেখানে ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যই কি সব থেকে কম যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর পন্থা না কি এর থেকে কম যন্ত্রণার মৃত্যুও সম্ভব, যেখানে পূর্ণ মাত্রায় মর্যাদা রক্ষার দিকটি সুরক্ষিত থাকবে? জানান আমাদের৷' ২ মে এই মামলার পরবর্তী শুনানি, তার আগেই কেন্দ্র নিজেদে মত জানাবে।

    শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেছেন আইনজীবী ঋষি মালহোত্রা, যেখানে ফাঁসির পরিবর্তে কোনও কম যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর আর্জি জানিয়েছেন তিনি৷ এই আবেদনেই মালহোত্রার দাবি, আইন কমিশনের পেশ করা ১৮৭তম রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বিশ্বের অনেক দেশেই ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের ক্ষেত্রে ফাঁসি তুলে দিয়ে বিদ্যুতের শক, মারণ ইনজেকশন বা গুলি করে মারাকে কম যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর উপায় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে৷

    এই অভিযোগ সম্পর্কে বিচার করতে গিয়েই শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের সদস্য বিচারপতি পি এস নরসিমহা বলেন, ফাঁসি বহুল প্রচলিত৷ তবে, বিদেশের কোথাও কোথাও মৃত্যুদণ্ড দিতে গিয়ে মারণ ইনজেকশনও ব্যবহার করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এমন অনেক ঘটনা আছে, যেখানে মারণ ইনজেকশন দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যু হচ্ছে না৷

    এই মর্মেই প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়ের সংযোজন,'আপনি কি প্রাণঘাতী ইনজেকশনের সঙ্গে জড়িত ঘটনাগুলি দেখেছেন৷ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ক্ষেত্রে যদি বেশি ওজনের ব্যক্তিকে এই ইনজেকশন দেওয়া হয়, তা হলে অনেক সময়েই দেখা যায়, তার মৃত্যু হতে অনেক সময় লাগছে৷'

    আদালতের পর্যবেক্ষণের সূত্রেই আইনজীবী দাবি করেন, কোনও পন্থাই 'ফুল প্রুফ' নয়৷ তাঁর কথায়, 'দিল্লিতে ফাঁসুড়ে পাওয়া যায় না, কলকাতা বা মুম্বই থেকে ফাঁসুড়েদের নিয়ে আসতে হয়৷' এর পরেই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের তরফে বলা হয়, 'আমাদের দেখতে হবে কোন পন্থাটি আনুপাতিক হারে সেরা, যেখানে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা যায়৷'
  • Link to this news (এই সময়)