• টিভি সারিয়ে দিন গুজরান, খেটে খাওয়া BJP কাউন্সিলরে মুগ্ধ এলাকাবাসী
    এই সময় | ২৩ মার্চ ২০২৩
  • নেতামশাইয়ের একখান গাড়ি থাকবে না, পেল্লাই গাড়ি থাকবে না! নিদেনপক্ষে একখান এসি! তা না হলে আর নেতা কী মশাই! বাংলা, হিন্দি সিরিয়াল সিনেমা আর বাস্তবের টুকরো ঝলক মিলিয়ে মিশিয়ে নেতাদের সম্পর্কে এমনই 'খাসা' ভাবনা তৈরি করেছেন আম আদমিদের একাংশ। সংবাদ মাধ্যমে চোখ রাখলেই দেখে যায়, অমুক নেতা এই গাড়ি চড়ছেন। ওর বাড়ি এত তলা।

    কিন্তু, এবার একেবারে অন্যচিত্র দেখা গেল পুরুলিয়া শহরে। পুরুলিয়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবির সেনগুপ্ত। BJP-র প্রতীকে নির্বাচনে লড়ে জয়ী হন তিনি। তিনি নিজের দোকানে টিভি সারিয়ে দিন গুজরান করেন। ‘উপরি আমদানি’ মানুষের ভালোবাসা।

    নেতা বা জনপ্রতিনিধি হওয়া জনগণের জন্য। এরসঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তির ভাণ্ডার ফুলে ফেঁপে ওঠার কোনও সম্ভাবনা নেই, দাবি করলেন আবির।

    ঠিক কী বলেছেন তিনি?

    এই বিষয়ে কাউন্সিলরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "এটাই আমার পেশা। আমি কাউন্সিলর হয়েছি মানুষের সেবা করার জন্য। ঘুরপথে উপার্জনের জন্য নয়।" তাঁর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের যাবতীয় দরকারি কাগজপত্র, সই করার কাজ ওই দোকান থেকেই সারেন তিনি। এর জন্য আলাদা করে কোনও অফিস নেই তাঁর।

    তিনি এদিন আরও বলেন, "এলাকার মানুষের কথা শোনার জন্য এবং তাঁদের সমস্যা সমাধানের জন্যই আমি জনপ্রতিনিধি। যেটুকু কাজ থাকে তা সাধ্যমত পূরণ করার চেষ্টা করি। প্রয়োজনে তাঁদের জন্য পুরসভাতেও যাই।" ১২ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত তিনি, জানান ওই কাউন্সিলর। তিন ভাই ও দিদিকে নিয়ে সংসার আবিরের। ভাইয়েদের বিয়ে হয়নি।

    তিনি পশুপ্রেমী হিসেবেও এলাকায় পরিচিত। পুরুলিয়া শহরের বরাকর রোডে নিজের দোকানে দাড়িয়ে আবির বলেন, "এলাকার বাসিন্দাদের জন্য আমার যতটুকু সম্ভব আমি করব।"

    তিনি নিজে গেরুয়া শিবিরের নেতা। কিন্তু, তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার প্রতি কোনো ক্ষোভ নেই তাঁর। তিনি বলেন, "অন্য দলের পুরপ্রতিনিধিদের থেকে কোনও অসহযোগিতা পায়নি। পুরসভার প্রতিও আমার কোনও অভিযোগ নেই।" তাঁর আরও সংযোজন, এখনও পর্যন্ত কারও থেকে কোনও অসহযোগিতা পায়নি। সকলের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এলাকাবাসীর জন্য কাজ করতে চান, জানালেন আবির।

    অন্যদিকে, এলাকাবাসীর দাবি, তাঁরা আবিরকে এভাবেই দেখে এসেছেন। এলাকায় তিনি পরপোকারী হিসেবেই পরিচিত। ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভাব অভিযোগ শোনার পাশাপাশি দোকানও সামলান তিনি, জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।
  • Link to this news (এই সময়)